SCIENCE TECH INFORMATION BANK LIMITED
SCIENCE TECH INFORMATION BANK LIMITED
বিজ্ঞানে জানার আছে অনেক কিছু
-মুহাম্মাদ শেখ রমজান হোসেন সম্পাদক, ইষ্টার্ণ সায়েন্স টেক রিভিউ, বাংলাদেশ সদস্য, এডিটরিয়াল বোর্ড, উইকিপিডিয়া, এনসাইক্লোপিডিয়া
মুহাম্মাদ শেখ রমজান হোসেন এডিটর-ইন-চীফ, ইষ্টার্ণ সায়েন্স টেক রিভিউ
বিজ্ঞান কি এবং কেন?
Science
is a systematic initiative that builds and organizes specialized
knowledge in the form of theoretical formulas in the form of
nature-based experiments, surveys, observations and reviewable
interpretations of the universe, including the Earth.
অর্থাৎ বিজ্ঞান এমন একটি পদ্ধতিগত উদ্যোগ- যা পৃথিবীসহ মহাবিশ্ব সম্পর্কে প্রকৃতিভিত্তিক পরীক্ষা নিরীক্ষা, সমীক্ষা, পর্যবেক্ষণ এবং পর্যালোচনাযোগ্য, অনুসিদ্ধান্ত, সিদ্ধান্ত ইত্যাদির তাত্ত্বিক সূত্রাকারে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সংক্রান্ত বিশেষ জ্ঞান তৈরি এবং সংগঠিত করে তোলে।
“বিজ্ঞান” শব্দটি ইংরেজি “Science” শব্দের বঙ্গানুবাদ। Science শব্দটির বুৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ “Scientia” থেকে, যার অর্থ জ্ঞান। বাংলায় বিজ্ঞান শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় বি(শেষ)+জ্ঞান=বিজ্ঞান।
আধুনিক বিজ্ঞানকে সাধারণত তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়: ১. প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, যা প্রাকৃতিক ঘটনাবলি ব্যাখ্যা প্রদান করে। ২. সামাজিক বিজ্ঞান , যা মানবিক আচরণ ও সমাজের অধ্যয়ন করে। ৩. সাধারণ/বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান যা বিজ্ঞানের আদি মৌলিক বিষয় যেমন যুক্তি, গণিত ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে।[২০][১৮] বর্তমানে স্বীকৃত কোন বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে বাস্তবিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে তাকে ফলিত বিজ্ঞান বা প্রায়োগিগ বিজ্ঞান বলে[২১][২২][২৩][২৪][২৫] যেমন প্রকৌশলবিদ্যা এবং চিকিৎসাশাস্ত্র।
জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নসহ এ ধরনের সকল বিজ্ঞান প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে মানুষের আচার-ব্যবহার এবং সমাজ নিয়ে যে বিজ্ঞান তা সমাজ বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। (সূত্রঃ উইকিপিডিয়া, এনসাইক্লোপিডিয়া)
বিজ্ঞানের শর্তাবলীঃ কোন বিষয় বিজ্ঞানের আওতাভুক্ত হতে হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে।
বিজ্ঞানী কারা?
জড়-প্রাণী নির্বিশেষে প্রকৃতির ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার ফলে কোন বিষয়ে প্রাপ্ত ব্যাপক ও বিশেষ জ্ঞানের সাথে জড়িত ব্যক্তি বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানবিদ কিংবা বৈজ্ঞানিক নামে পরিচিত হয়ে থাকেন।
বিজ্ঞানীরা বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জ্ঞান অর্জন করেন এবং প্রকৃতি ও সমাজের নানা মৌলিক বিধি ও সাধারণ সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন।[২]
বিজ্ঞানী হওয়ার শর্তাবলীঃ
যে গবেষকই পরীক্ষণটি করুন না কেন ফলাফল একই হতে হবে। অর্থাৎ ব্যক্তি চেতনা অনুযায়ী বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষণের ফলাফল কখনও পরিবর্তিত হতে পারে না।
গবেষণা
বিজ্ঞান এক বা একাধিক বিজ্ঞানীর গবেষণার উপর নির্ভর করে। গবেষণাগুলো সাধারণত বিজ্ঞানীদের দ্বারা শিক্ষাক্ষেত্রে এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে, সরকারি
প্রতিষ্ঠানে এবং কোম্পানিভিত্তিক উদ্যোগে করা হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণার
বাস্তবিক প্রভাব বৈজ্ঞানিক নীতি গ্রহনে বাধ্য করেছে। বৈজ্ঞানিক নীতি দ্বারা
বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রভাবিত করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোকে
জনসার্থে ব্যবহৃত পন্য, স্বাস্থ্যসেবা, জন কাঠামো, পরিবেশের সুরক্ষা এবং অস্ত্র তৈরির মত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে নীতিমালা অনুসরন করানো হয়।
গণিতকে অনেকেই আলাদা একটি শ্রেণি হিসেবে দেখেন। অর্থাৎ তাদের মতে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান আর গণিত এই তিনটি শ্রেণি মিলে বিজ্ঞান। ঐ দৃষ্টিকোণে গণিত হলো আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান আর প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞান হলো পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞান।
গবেষণার গুরুত্ব
গবেষণা (Research) হল
মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়া এবং নতুন কিছু আবিষ্কারের
নেশায় বিজ্ঞানীদের কার্যাবলী। যিনি গবেষণা করেন বা গবেষণা কর্মের সাথে
জড়িত, তিনি গবেষক বা গবেষণাকারী (Researcher) নামে পরিচিত।
সুনির্দিষ্ট প্রজেক্ট (প্রকল্প) বা উদ্দেশ্যের আওতায় প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক তত্ব, তথ্য, উপাত্ত এবং আনুষঙ্গিক বৈজ্ঞানিক সাজ-সরন্জাম বা প্রযুক্তি সংগ্রহ করতঃ এতদ্বিষয়ে নিরলস পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সমীক্ষা, পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিবিড় তথ্য বিশ্লেষণ ও সূত্র উদ্ভাবন করতঃ উদ্ভাবিত সূত্রমতে গবেষণা সম্পকির্ত গৃহীত অনুসিদ্ধান্ত, ও সিদ্ধান্ত এবং চূড়ান্ত ফলাফল গ্রহণ উপস্থাপন এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা সন্নিবেশিত করা হয়। গবেষণার প্রধান ধাপসমূহ হচ্ছে:
● প্রাসঙ্গিক গবেষণা ও তথ্য পর্যালোচনা
●গবেষণার সমস্যা নির্দিষ্টকরণ
● অনুমিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও গবেষণার প্রশ্ন নির্দিষ্টকরণ
● তথ্যসংগ্রহ, বিশ্লেষণ
● প্রাথমিক ও চূড়ান্ত গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিকরণ।
প্রযুক্তির সংজ্ঞা
Technology
is the sum of any techniques, skills, methods, and processes used in
the production of goods or services or in the accomplishment of
objectives, such as scientific investigation. Wikipedia
বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে মানুষের প্রায়োগিক কাজে লাগানোর উপায়কে প্রযুক্তি বলে।
প্রযুক্তি হল জ্ঞান, যন্ত্র এবং তন্ত্রের ব্যবহার কৌশল যা আমরা আমাদের জীবন সহজ করার স্বার্থে ব্যবহার করছি।প্রযুক্তির সংজ্ঞায় বলা যায়, "প্রযুক্তি হল কিছু প্রায়োগিক কৌশল যা মানুষ তার প্রতিবেশের উন্নয়নকার্যে ব্যবহার করে।" যেকোন যন্ত্র এবং প্রাকৃতিক উপাদান সম্বন্ধে জ্ঞান এবং তা দক্ষভাবে ব্যবহারের ক্ষমতারকেও প্রযুক্তি বলা হয়।
► ‘ প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করে সমস্ত মেশিন, সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি এবং যোগাযোগ ও পরিবহনের ডিভাইস ও দক্ষতা যা আমরা তৈরি এবং ব্যবহার করি (১৯৩৭ সালে মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী রেড বাইন প্রদত্ত প্রযুক্তির সংজ্ঞা)।
► ‘প্রযুক্তি হল শিল্প ও প্রকৌশল ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ব্যবহার যা প্রয়োজনীয় জিনিস আবিষ্কার ও সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়’ এবং ‘মেশিন বা সরঞ্জাম হল প্রযুক্তির তৈরি ফলাফল’(মেরিয়ামিয়াম-ওয়েস্টার লার্নার্স ডিকশনারি)।
► এটি হলো আমরা চারপাশের কাজ কিভাবে করি তার কৌশল (উরসুলা ফ্রাঙ্কলিন কর্তৃক ১৯৮৯ সালে ‘রিয়েল ওয়ার্ল্ড অফ টেকনোলজি’ লেকচারে প্রদত্ত সংজ্ঞা)।
► ‘প্রযুক্তি এমন একটি পদ্ধতি- যা মানুষের উদ্দেশ্য পূরণ করে’ (ডব্লিউ ব্রায়ান আর্থার)।
‘প্রযুক্তি’ শব্দটির ব্যবহার গত ২০০ বছরে তাৎপর্যপূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বিংশ শতাব্দীর আগে এই শব্দটি কখনো কখনো ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এর কৌশলগত বিদ্যাকে বোঝানো হতো ।
‘প্রযুক্তি’ শব্দটি প্রাধান্য পায় ইউরোপ কেন্দ্রিক দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের পর। বস্তুতঃ এই শব্দটির অর্থ বিংশ শতাব্দীতে পরিবর্তিত হয় যখন থর্স্টেইন ভেবলেন থেকে শুরু করে আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানীরা জার্মান Technik থেকে ‘প্রযুক্তি’ এর অনুবাদ করা শুরু করেন। জার্মান ও ইউরোপীয় ভাষায় technik এবং technologie দুটি শব্দ ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে কিন্তু ইংরেজিতে এ দুটিকেই একই অর্থে ‘Technology’ তে অনুবাদ করা হয়েছে।
বিস্তৃত পরিসরে ব্যাপক অর্থে প্রযুক্তি হল
যন্ত্র ও সরঞ্জাম যা বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি
সুদূরপ্রসারি ধারণা যা সরল যন্ত্র যেমন চামচ থেকে শুরু করে অনেক জটিল
যন্ত্র যেমন মহাশূন্য স্টেশন ইত্যাদি-কে অন্তর্ভুক্ত করে। যন্ত্র ও সরঞ্জাম
কেবল বস্তুই হতে হবে তা নয় যেমন কম্পিউটার সফটওয়্যার ও ব্যবসার পদ্ধতি এগুলো প্রযুক্তির সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে।
ডেমোক্রিটাসের অণু তত্ত্ব
গ্রীক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস ঈসাব্দপূর্ব ৪০০ অব্দে সর্বপ্রথম পদার্থের ক্ষুদ্রতম ‘কণা’ (atom)নিয়ে মতবাদ পোষণ করেন। ‘অ্যাটোমাস’ (atomas) শব্দ থেকে এটম (atom) শব্দটির বুৎপত্তি যার অর্থ আর ভাগ করা যাবে না।
নিউক্লিয়ার্স
প্রোটন
ও ইলেকট্রন নিয়ে গঠিত হয় পরমাণু কেন্দ্র-এই কেন্দ্রকে বলা হয়
নিউক্লিয়ার্স। নিউক্লিয়ার্স এর চার পাশে ঘুরতে থাকে পরমাণুর ইলেকট্রন।
নিউক্লিয়ার্স আবিষ্কার
তেজস্ক্রিয় পদার্থ রেডিয়াম থেকে আলফা কণারা প্রচণ্ড গতিতে বেরিয়ে আসে। আলফা কণা খুব ভারী এবং যথেষ্ট বৈদ্যুতিক চার্জ আছে। আলফা
কণা পরমাণুর ভেতর দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে তবে তার ব্যতিক্রমও হতে পারে
অর্থাৎ অনায়াসে না বেরিয়ে বরং উল্টো দিকে ফিরে আসতে পারে এর কারণ পরীক্ষা
করে রাদার ফোর্ড দেখতে পান যে, পরমাণুর সব
বৈদ্যুতিক চার্জ এবং ভর যেন একটি স্থানে বসে আছে এবং আলফা কণিকা ওর সঙ্গেই
টক্কর খেয়ে ফিরে আসে। ওই স্থানের নাম দেওয়া হলো নিউক্লিয়াস। https://www.bigganchinta.com/physics/strangeness-of-quantum-theory
ইলেকট্রন
ইলেকট্রন একটি অধঃ-পরমাণু (subatomic) মৌলিক কণা (elementary particle) যা
একটি ঋণাত্মক তড়িৎ আধান বহন করে। ইলেকট্রন ফার্মিয়ন এবং লেপ্টন
শ্রেনীভুক্ত। এটি প্রধানত তড়িৎ-চুম্বকীয় মিথষ্ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।
পারমাণবিক কেন্দ্রের (নিউক্লিয়াসের) সঙ্গে একত্র হয়ে ইলেকট্রন পরমাণু তৈরি
করে এবং এর রাসায়নিক বন্ধনে অংশগ্রহণ করে। ইলেক্ট্রনের ভর 9.109×10^−31 kg এবং 5.489×10^−4 amu। আইনস্টাইনের ভর-শক্তি সমতা নীতির ভিত্তিতে, এই ভরটি 0.511 MeV শক্তি বিশিষ্ট।
"ইলেকট্রন লেপ্টন নামক অধঃপারমাণবিক কণার শ্রেণীতে অবস্থিত। এদেরকে মৌল কণিকা হিসেবে ধরা হয়, অর্থাৎ এদেরকে আরও ক্ষুদ্রতর অংশে ভাগ করা সম্ভব নয়। অন্যান্য কণার মত ইলেকট্রনও তরঙ্গ হিসেবে আচরণ করতে পারে। এই আচরণটিকে তরঙ্গ-কণা দ্বৈত আচরণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পদার্থবিজ্ঞানে এর অপর নাম কমপ্লিমেন্টারিটি" (উইকিপিডিয়া)।
প্রোটন কি? প্রোটন একটি অতিপারমাণবিক কণার যৌগিক কণা। আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানে প্রোটন হলো হ্যাড্রোন (hadron)-এর অন্তর্গত ব্যারিয়ন শ্রেণির যৌগিক কণা। এটি তিনটি কোয়ার্ক কণা নিয়ে তৈরি হয়। এর ভিতরে থাকে দুটি আপ কোয়ার্ক (up quarks) এবং একটি ডাউন কোয়ার্ক (down quark)। দুটি
আপ কোয়ার্কের আধান হলো- ২/৩+২/৩=৪/৩। পক্ষান্তরে এতে -১/৩যুক্ত ডাউন
কোয়ার্ক থাকায় এর চূড়ান্ত মান দাঁড়ায় ৪/৩-১/৩= ১। এই কারণে এর প্রতীক p+।
এই কোয়ার্কগুলো গ্লুয়োন শক্তি দ্বারা আবদ্ধ থাকে। এর ব্যাস ১.৬-১.৭ এফএম।
পরমাণুর কেন্দ্রে এক বা একাধিক প্রোটন থাকে। একটি
পরমাণুতে অবস্থিত প্রোটনের সংখ্যাকে ওই পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা বলা হয়।
যেমন সোডিয়ামের পরমাণুতে প্রোটন থাকে ১১টি। তাই সোডিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা
১১।
।বিশ্ব সৃষ্টিতত্ত্বের কতিপয় তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
►আইনস্টাইন তাঁর জেনারেল রিলিটিভিটি থিওরির ব্যাখ্যা করতে
গিয়ে বলেন, “মহাকর্ষ বল-কে আমরা যেভাবে ব্যাখ্যা করি, যেমনটা বলেছিলেন
আইজাক নিউটন, মহাকর্ষ বলের প্রকৃতি আসলে তেমন নয়। মহাকর্ষ দুটি বস্তুর মধ্যে
ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বল নয়; বরং ভারী বস্তু স্থান-কালের চাদর
দুমড়েমুচড়ে দেয়। ফলে এর চারপাশে তৈরি হয় বক্রতা। সেই বক্রতার ভেতর যখন আরেকটি
বস্তু এসে পড়ে, তখন মনে হয় একটি বস্তু আরেকটি বস্তুকে আকর্ষণ করছে”।
কোয়ান্টাম
বলবিজ্ঞান কী?
কোয়ান্টাম
বলবিজ্ঞান (ইংরেজি: Quantum mechanics) বা কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান (ইংরেজি: Quantum
physics)
আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা-যা পরমাণু এবং
অতিপারমাণবিক কণার/তরঙ্গের মাপনীতে পদার্থের আচরণ বর্ণনা করে। কোয়ান্টাম
বলবিজ্ঞানকে ব্যবহার করে বিশাল কোন বস্তু যেমন তারা ও ছায়াপথ সম্পর্কিত বিষয়
ব্যাখ্যা করা যায় তেমনি স্ট্যান্ডার্ড মডেলভিত্তিক বিশ্ব সৃষ্টিতত্ত্বমূলক মহা
বিস্ফোরণ (বিগ ব্যাং) এর ঘটনাও ব্যাখ্যা করা যায়।
উল্লেখ্য, পদার্থবিজ্ঞানের যেসব ক্ষেত্র ক্লাসিক্যাল (চিরায়ত) নিউটনীয়
বলবিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না, সেসব ক্ষেত্রে
পদার্থগুলির জড়তাত্ত্বিক ভৌত (অস্বাভাবিক) আচরণ সম্পর্কে ধারণা পাবার জন্য
পদার্থবিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান ব্যবহার করে থাকেন। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান
রসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স,
কণা পদার্থবিজ্ঞান, ন্যানোপ্রযুক্তি এবং
প্রযুক্তিবিদ্যার আধুনিকায়নের ভিত্তি। বিজ্ঞানের কোয়ান্টামভিত্তিক এই শাখাগুলো
বিগত পঞ্চাশ বছরব্যাপী পৃথিবীকে রাতারাতি এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত
করেছে। (সূত্রঃhttps://bn.wikipedia.org/wiki//কোয়ান্টাম_বলবিজ্ঞান)।
এক
নজরে কোয়ান্টামের প্রকৃতি-বৈশিষ্ট্য
►কোয়ান্টাম
বলবিজ্ঞানকে ব্যবহার করে বিশাল কোনো বস্তু যেমন তারা ও ছায়াপথ এবং মহাবিস্ফোরণ
সংক্রান্ত বিশ্বতত্ত্বমূলক ঘটনার
সুক্ষ্ণতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা যায়।
►পদার্থবিজ্ঞানের
সুক্ষ্ণতাত্ত্বিক যেসব ক্ষেত্রে চিরায়ত নিউটনীয় বলবিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা
যায় না,
সেসব ক্ষেত্রে পদার্থগুলির ভৌত আচরণ সম্পর্কে ধারণা পাবার জন্য
পদার্থবিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান ব্যবহার করে থাকেন।
►পারমাণবিক অথবা তার চেয়েও ছোট মাপের কোনো ভৌত ব্যবস্থায়, খুব নিম্ন অথবা খুব উচ্চ শক্তিতে, অথবা অতিশীতল তাপমাত্রায় চিরায়ত এবং কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের বিশ্লেষণের মধ্যে প্রায়শই পার্থক্য দেখা যায়।য়ান্টাম বলবিজ্ঞান রসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, ইলেক্ট্রনিক্স, কণা পদার্থবিজ্ঞান, ন্যানোপ্রযুক্তি এবং প্রযুক্তিবিদ্যার আধুনিক উন্নয়নের ভিত্তি, এবং বিজ্ঞানের এই শাখাগুলো বিগত পঞ্চাশ বছরে পৃথিবী প্রায় সম্পূর্ণভাবে রূপান্তরিত করেছে।
কোয়ান্টাম তত্ত্বের স্বরূপ: “আলোকরশ্মি যখন কোন উৎস থেকে অনবরত বের না হয়ে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিচ্ছিন্ন প্যাকেট শক্তি গুচ্ছ আকারে বের হয়।” অর্থাৎ, E=hν; যেখানে E= ফোটনের শক্তি, h= প্ল্যাংক ধ্রুবক, ν = ফোটনের কম্পাংক। প্রত্যেক বর্ণের আলোর জন্য এক একটি বিচ্ছিন্ন প্যাকেটের শক্তির নির্দিষ্ট মান রয়েছে। এই এক একটি বিচ্ছিন্ন প্যাকেটকে কোয়ান্টাম বা ফোটন বলে। বিজ্ঞানী ম্যাক্সপ্লাঙ্ক ১৯০০ সালে কোয়ান্টাম তত্ত্ব প্রদান করেন।
ওয়ার্ণার হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি
এই নীতির বিবৃতিতে বলা আছে-"কোনো কণিকার অবস্থান এবং ভরবেগ, একইসাথে নিখুঁতভাবে জানা সম্ভব না। অবস্থান নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে গেলে ভরবেগের মানে ভুলের পরিমাণ বাড়বে, আবার ভরবেগ নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে গেলে অবস্থানের মানে ভুলের পরিমাণ বাড়বে।"
অনিশ্চয়তা নীতি কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অন্তর্গত একটি সমীকরণ, যা পারমাণবিক ও অবপারমানবিক জগতের একটি মৌলিক সীমা অর্থাৎ একটি কণার প্রকৃত অবস্থান (x) এবং ভরবেগ (p) এর একটি সীমা প্রকাশ করে।
স্ট্রিং থিওরি
পদার্থবিজ্ঞানে স্ট্রিং থিওরি হচ্ছে এক ধরনের গণিতনির্ভর তাত্ত্বিক কাঠামো দ্বারা বিন্দু সদৃশ কণা বা কণা পদার্থবিজ্ঞানকে একমাত্রিক তার বা স্ট্রিং দ্বারা প্রতিস্থাপন করা। অর্থাৎ স্ট্রিং তত্ত্ব অনুযায়ী দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা বিহীন কোনো গোল বিন্দু নেওয়া হলে এবং তাকে বহুগুণে বিবর্ধন করা গেলে, সেখানে
শুধু একমাত্রিক বিশাল লম্বা তার বা স্ট্রিং দেখা যাবে। স্ট্রিং তত্ত্ব
অনুসারে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সকল মৌলিক কণাই আসলে একরকমের তার। এসব তার আবার
বিভিন্ন কম্পাঙ্কে কাঁপছে। এসব তারের কম্পাঙ্কের ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন রকম বৈশিষ্ট্যের মৌলিক কণিকার সৃষ্টি হয়। তারের কম্পণের পার্থক্যই এসব কণিকার আধান, ভর নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে।
স্ট্রিং থিওরী একটি বিস্তৃত ও বৈচিত্রময় বিষয় যা পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক প্রশ্নগুলির সমাধান করার চেষ্টা করে। স্ট্রিং থিওরী দ্বারা কৃষ্ণগহ্ববর, প্রারম্ভিক মহাবিশ্বের গঠনকৌশল পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞান এবং ঘনীভূত পদার্থবিজ্ঞানের নানাবিধ সমস্যাগুলিতে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এটি বিশুদ্ধ গণিতের বেশ কয়েকটি বড় উন্নয়নকে অনুপ্রাণিত করেছে। যেহেতু স্ট্রিং তত্ত্ব মহাকর্ষ এবং কণা পদার্থবিজ্ঞানের একটি সম্ভাব্য সমন্বিত বিবরণ প্রকাশ করে, এজন্য স্ট্রিং তত্ত্বকে সবকিছুর তত্ত্ব বলেও অভিহিত করা হয়। সবকিছুর তত্ত্ব এমন এক গাণিতিক মডেল যা দ্বারা পদার্থের অবস্থা এবং সমস্ত বলকে একত্রে ব্যাখ্যা করা যায় (উইকিপিডিয়া)
স্ট্রিং থিওরি (কম্পনতত্ত্ব)
পদার্থবিজ্ঞানে স্ট্রিং থিওরি হচ্ছে একধরণের গণিতনির্ভর তাত্ত্বিক কাঠামো দ্বারা বিন্দু সদৃশ কণা বা কণা পদার্থবিজ্ঞানকে একমাত্রিক তার বা স্ট্রিং দ্বারা প্রতিস্থাপন করা। অর্থাৎ স্ট্রিং তত্ত্ব অনুযায়ী দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা বিহীন কোনো গোল বিন্দু নেওয়া হলে এবং তাকে বহুগুণে বিবর্ধন করা গেলে, সেখানে
শুধু একমাত্রিক বিশাল লম্বা তার বা স্ট্রিং দেখা যাবে। স্ট্রিং তত্ত্ব
অনুসারে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সকল মৌলিক কণাই আসলে একরকমের তার। এসব তার আবার
বিভিন্ন কম্পাঙ্কে কাঁপছে। এসব তারের কম্পাঙ্কের ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন রকম বৈশিষ্ট্যের মৌলিক কণিকার সৃষ্টি হয়। তারের কম্পণের পার্থক্যই এসব কণিকার আধান, ভর নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে। (উইকিপিডিয়া)
সুপারস্ট্রিং বা এম-তত্ত্ব
সুপারস্ট্রিং বা এম-তত্ত্ব গবেষকরা বলেন, আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্বের বাইরে অবস্থিত বহুমাত্রিক জগৎ আমাদের জগৎকে প্রভাবিত করে। তাই মহাকর্ষ বলে যে অসামঞ্জস্যতা তা ব্যাখ্যার জন্য বিশ্বতত্ত্বের একীভূতকরণ সূত্র স্থান-কালের মোট ১১টি মাত্রা রয়েছে। যার ৪ মাত্রা আমাদের গোচরীভূত বাকি ৭টি মাত্রা আমাদের থেকে লুকিয়ে আছে।
মহাবিশ্ব তথা স্থানকাল নিজেই মৌলিক কণা বা কোয়ান্টা দিয়ে গঠিত। এটি আমাদের সাধারণ চিন্তার বিপরীতে যায়। আমরা মনে করি শূন্য স্থান একেবারেই শূন্য, কিন্তু লুপ কোয়ান্টাম তত্ত্বগুলো বলে শূন্যস্থানও কিছু একটা দিয়ে গঠিত। স্থানকালের প্রতিটি কণা অন্য প্রতিবেশী কণার সাথে মিলে এক ধরনের লুপ তৈরি করে যার মাধ্যমে সৃষ্টি হয় মহাবিশ্বের সকল পদার্থ ও শক্তির।
নিউটনীয় বলবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বহির্ভূত পরমাণুর ইলেক্ট্রনীয় গঠন ও আলোর ধর্মতত্ত্ব প্রসঙ্গে
১৯শ শতকের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে আবিষ্কার করেন যে, চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ধারণাগুলি অত্যন্ত ক্ষুদ্র অতিপারমাণবিক কণা বস্তুর ওপরে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে ১৯শ শতকের শেষের দিকে এসে পরমাণুর ইলেক্ট্রনীয় গঠন ও আলোর ধর্মের উপর কিছু আবিষ্কার চিরায়ত বলবিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হচ্ছিল না। বিংশ শতাবদীতে অর্থাৎ ১৯০৫ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন বুঝতে পারেন যে, চিরায়ত (ক্ল্যাসিকাল) বলবিজ্ঞানের ধারণাগুলি অত্যন্ত দ্রুত গতিবেগের অর্থাৎ আলোর গতিবেগের কাছাকাছি বেগের বস্তুর ওপর প্রয়োগ করা যায় না। এরি পরিপ্রেক্ষিতে পরমাণুর ইলেক্ট্রনীয় গঠন ও আলোর ধর্মের ব্যাখ্যা করার জন্য আইনস্টাইন আবিস্কার করেন আপেক্ষিকতাভিত্তিক বলবিজ্ঞান নামের তত্ত্ব। অন্যদিকে ১৯০০ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে বেশ কিছু পদার্থবিজ্ঞানী (মাক্স প্লাংক, নিল্স বোর, আলবার্ট আইনস্টাইন, ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ, লুই দ্য ব্রয়ি, এর্ভিন শ্র্যোডিঙার, প্রমুখ) কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান উদ্ভাবন করেন।
পদার্থবিজ্ঞানের আইন প্রণয়নে কতিপয় তাত্ত্বিক কাঠামোর বিন্যাস
বলবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বহির্ভূত দুর্বোধ্য পরমাণুর ইলেক্ট্রনীয় গঠন ও আলোর ধর্মের তাত্ত্বিক আবিষ্কারের পাশাপাশি ম্যাক্স প্ল্যাংকের কোয়ান্টাম মেকানিকস, আলবার্ট আইনস্টাইনের ও স্পেশাল ও জেনারেল রিলাটিভিটি থিওরী, হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তাবাদ পর পর আবিস্কারের ফলে পদার্থ বিজ্ঞানের জন্য নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজন দেখা দেয়। এরি পরিপ্রেক্ষিতে বিংশ শতাব্দীতে পদার্থবিজ্ঞানের আইন প্রণয়নের জন্য দুটি তাত্ত্বিক কাঠামো আবির্ভূত হয়। প্রথম কাঠামোটি হচ্ছে আলবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব (General Relativity Theory) যা মহাকর্ষ বল এবং স্থান ও সময় গঠনকে ব্যাখ্যা করে। দ্বিতীয় কাঠামোটি হচ্ছে কোয়ান্টাম মেকানিক্স যা সম্ভাব্যতার নীতি নির্দেশিত মাত্রার সূত্র বা তত্ত্ব।
আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বটি উৎকৃষ্টমানের (ক্লাসিক্যাল) পদার্থবিজ্ঞানের কাঠামোর মধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে, অন্যদিকে মৌলিক কণাগুলি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের কাঠামোর মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে এই দুইটি কাঠামো অতিপারমাণবিক মৌলিক কণাসহ মহাবিশ্বের পর্যবেক্ষণযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহকে ব্যাখ্যায় অনেকটা সফলতা অর্জন করে।
অদৃশ্য শক্তি (Dark Energy)
মহাজাগতিক ক্ষুদ্র তরঙ্গ পটভূমির পরিমাপ করার মাধ্যমে জানা গেছে যে মহাবিশ্ব প্রায় সমতলীয়। এ কারণে এর শতকরা প্রায় ৭০ভাগ শক্তি ঘনত্বের কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। নবতারার স্বাধীন পরিমাপের মাধ্যমে এটি প্রমাণ করা হয়েছে যে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ একটি অরৈখিক ত্বরণে হচ্ছে। এই ত্বরণ ব্যাখ্যার জন্য সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে এমন একটি মহাবিশ্বের ধারণা গ্রহণ করা প্রয়োজন যাতে ঋণাত্মক চাপবিশিষ্ট বিপুল সংখ্যক শক্তি উপাদান থাকা প্রয়োজন। এ থেকেই এসেছে অদৃশ্য শক্তির ধারণা। ২০০৬ সালে ডব্লিউএমএপি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে মহাবিশ্বে ৭৪% অদৃশ্য শক্তি, ২২% অদৃশ্য বস্তু এবং মাত্র ৪% সাধারণ বস্তু যা এযাবৎ কালের পদার্থবিজ্ঞানীদের অতি চেনা-জানার মধ্যে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালে আরনো পেনজিয়াস এবং রবার্ট উড্রো উইলসন অনেকটা আকস্মিকভাবেই পটভূমি বিকিরণ আবিষ্কার করেন। তারা এ সময় বেল ল্যাবরেটরিসের মালিকানাধীন একটি ক্ষুদ্রতরঙ্গ গ্রাহক
যন্ত্র দিয়ে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের মান নিরূপণ করছিলেন। তারা যে বিকিরণ
আবিষ্কার করেন তা আইসোট্রপীয় ছিল এবং এর মধ্যে কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণের ধর্ম
বাদ্যমান ছিল; এর তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩
কেলভিন। এই আবিষ্কার মহাবিস্ফোরণ মতবাদের পক্ষে একটি যুক্তেই হয়ে দাঁড়ায়
এবং পেনজিয়াস ও উইলসনকে এনে দেয় নোবেল পুরস্কার। (সূত্রঃ উইকিপিডিয়া)
অদৃশ্য বস্তু (Dark Matter)
মহাজাগতিক ক্ষুদ্র তরঙ্গ পটভূমি এবং মহাকাশ সম্প্রসারণের বৃহৎ-পরিসর গঠন পর্যবেক্ষণ ও সুপারনোভা পর্যবেক্ষণসহ মহাবিশ্বের বিভিন্ন উপাদানের পরিমাণের আনুপাতিক শক্তি-ঘনত্ব পরিমাপকারী ল্যাস্ব্ডা-কোল্ড ডার্ক ম্যাটার (Lambda-Cold Dark Matter) বা ল্যাম্বডা-শীতল অদৃশ্য বস্তু) বা কনকর্ডেন্স মডেল (concordance model) এর নকশা অনুসারে ১৯৭০ ও ৮০'র দশকে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ দ্বারা এটি প্রমাণিত হয়, মহাবিশ্বের ছায়াপথসমূহ এবং এদের অন্তবর্তী স্থানে বিদ্যমান মহাকর্ষীয় বলের আপাত শক্তির পরিমাণ এত বেশি যে, দৃশ্যমান পদার্থগুলোর পক্ষে এ শক্তি সরবরাহ করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট পদার্থের তুলনায় শক্তি অনেক বেশি। এর পর বিজ্ঞানীরা এই ধারণা গ্রহণ করতে বাধ্য হন যে, মহাবিশ্বের শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ পদার্থই সাধারণ বেরিয়ন পদার্থ নয় বরং এরা হচ্ছে অদৃশ্য বস্তু (dark matter)। এর পূর্বে ধারণা করা হত মহাবিশ্বের সকল পদার্থই সাধারণ যা আমরা দেখতে বা অনুধাবন করতে পারি।
অদৃশ্য, প্রবল শক্তিমত্তার অধিকারী বলে সত্যিই কিছু আছে!
►১৯৭৮ সালে ১১টি সর্পিল ছায়াপথ পরীক্ষা করেন রুবিন ও তাঁর সহকর্মীরা। উক্ত ছায়াপথের প্রতিটি এতই জোরে ঘুরছিল যে, নিউটনের সূত্র অনুযায়ী তাদের কোনোভাবে একত্রে থাকার কথা নয়। একই বছর আলবার্ট নামক এক ডাচ রেডিও জ্যোতির্বিদ আরও ডজন খানেক সর্পিল ছায়াপথের পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ প্রকাশ করেন। তাদের মধ্যেও একই ধরনের কণা ধর্ম পরিদৃষ্ট হয়েছিল। এসব মহাকাশীয় ঘটনা জ্যোতির্বিদদের বুঝতে সহায়ক হয়েছিল যে, আসলে ডার্ক ম্যাটার, ডার্ক এনার্জি অর্থাৎ অদৃশ্য, প্রবল শক্তিমত্তার অধিকারী বলে মহাবিশ্ব জুড়ে সত্যিই কিছু আছে ।
উল্লেখ্য, মহাবিশ্বে এ ধরনের অদ্ভূত অদৃশ্য বস্তুর পরিমাণ ২৭%। ডাক এনার্জির পরিমাণ ৬৮%। বাকী ৫% বস্তু আমাদের চেনাজানা বস্তু।অর্থাৎ সিংহভাগ (৯৫%) আমাদের জ্ঞান বুদ্ধির বাইরের বিষয়।
সমাধান নয় বরং গভীরই হয়েছে আমাদের অজানাটা!
►মহাবিশ্ব তথা প্রকৃতির অন্তনির্হিত তত্ত্ব-তথ্য জানতে চাওয়াটাই বিজ্ঞানীদের জন্য যেন এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ত্রিশের দশক থেকে এ পর্যন্ত অজানা অদৃশ্য ডার্ক এনার্জি এবং ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা গেছে। তাতে কোনো সমাধান নয়, বরং যেন আরও গভীর হয়েছে আমাদের অজানাটাই। কারণ, খুঁজে পাওয়া যায়নি ওই রহস্যময় বস্তু ও শক্তির উৎসমূল। তাই ডাক ম্যাটার এখন বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর মধ্যে অন্যতম (বিজ্ঞানচিন্তা)।
মহাকাশে চোখ রেখে জ্যোতির্বিদেরা মাঝে মধ্যে কি অদ্ভূত কিছু বিষয় দেখতে পান???
►মহাকাশে
চোখ রেখে জ্যোতির্বিদেরা মাঝে মধ্যে অদ্ভূত কিছু বিষয় দেখতে পান। ডার্ক
ম্যাটার সংক্রান্ত সম্প্রতি পাওয়া আরেকটা প্রমাণ অবিশ্বাস্য রকম উদ্ভট বলে
মনে হয়। জ্যোতির্বিদরা মহাকাশে একটা মহাজাগতিক সংঘর্ষ পর্যবেক্ষণ করেছেন।
দুটি গ্যালাক্সি ক্লাষ্টারের সংঘর্ষ হয়েছিল কোটি কোটি বছর আগে।
স্বাভাবিকভাবে এই সংঘর্ষে গ্যাস ও ধুলার মতো সাধারণ পদার্থগুলোর বড় ধরনের
বিস্ফোরণ দেখা গেল। এর বাইরে আরেকটা ঘটনা দেখে বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেলেন
বিজ্ঞানীরা। সংঘর্ষ এলাকাটা ভালো করে খেয়াল করে তাঁরা দেখলেন, ডার্ক
ম্যাটারের দুটি বিশাল গুচ্ছ পরস্পর সংঘর্ষের মুখে পড়ল। কিন্তু এমনভাবে একটা
আরেকটার ভেতর দিয়ে চলে গেল যেন কিছুই হয়নি।...সাধারণ পদার্থ যেমন সংঘর্ষে
ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়, ডার্ক ম্যাটারের বেলায় তেমন কিছু ঘটেনি।
ডার্ক ম্যাটারের সঙ্গে ডার্ক ম্যাটারের সংঘর্ষে কিছুই হয় না-এই টুকুন জানাই যেন সম্বল।
►কিছু মহাজাগতিক
ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কিত কিছু তথ্য
জেনেছেন। সেগুলো হলো এর ভর আছে, এগুলো অদৃশ্য। ডার্ক ম্যাটারের সঙ্গে
ডার্ক ম্যাটারের সংঘর্ষে কিছুই হয় না-এই টুকুন জানাই যেন সম্বল। এছাড়া
ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে আমরা আর কিছুই জানিনা। এসব দেখে মনে হয়, পদার্থ বিজ্ঞানও মাঝেমধ্যে বোটানির মতো শুধু তালিকা তৈরি করা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না।
যে কারণে কোমা ক্লাস্টারের নক্ষত্রগুলো ছিটকে যাচ্ছে না
ফ্রিৎজ
জুইকি ভাবলেন একটিমাত্র উপায়েই কোমা ক্লাস্টারের নক্ষত্রগুলো ছিটকে
যাওয়া রোধ করা সম্ভব, সেটা হলো টেলিস্কোপে সেখানে যে পরিমাণ বস্তু পাওয়া
যাচ্ছে, তার চেয়ে যদি কয়েক শত গুণ বেশি বস্তু থাকে তাহলেই কেবল
নক্ষত্রগুলো পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়ে একজোটে সহাবস্থান করতে পারবে।
উল্লেখ্য, জুইকির ফলাফল বছর খানেক আগেও ডাচ বিজ্ঞানী... এর গণনার সাথে মিলে
যায়। ফ্রিৎজ জুইকি এবার তার সবোর্চ মেধার প্রয়োগ হিসাবে ব্যবহার করলেন
তার গভীর অন্তর্দৃষ্টি যাকে কাশফ বলা হয় । জুইকি
সেই অন্তর্দৃষ্টতে স্বীয় অন্তরাত্মা দিব্যি অনুভব করলেন যে, নিউটোনিয়ান
সূত্রের উর্ধ্বে উঠে গ্যালাক্সির নক্ষত্রগুলোর পরস্পর সহাবস্থানে থাকতে
হলে গ্যালাক্সিগুলোতে দৃশ্যমান ভরের চেয়ে যদি আরও অন্ততঃ ৪০০ গুণ অদৃশ্য
বস্তু থাকে। সেই অজানা অদৃশ্য বস্তুদের জুইকি নাম দিলেন Dunkle Materie (Dark Matter) বা ডার্ক ম্যাটার (গুপ্ত বস্তু)। এতে
স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, মহাবিশ্বে পদার্থের বন্টনের ক্ষেত্রে ভয়াবহভাবে
কিছু একটা ঠিক নেই। ইতিহাসে সেটাই ছিল প্রথম ইঙ্গিত। অর্থাৎ মহাবিশ্বে
পৃথিবীর মতো নিউটোনিয়ান গাণিতিক সূত্রের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে প্রচন্ড
রকমের ব্যতিক্রম দেখা যায়।
ফ্রিৎজ জুইকির এই তত্ত্ব পৃথিবীতে সুপ্রতিষ্ঠিত নিউটোনিয়ান মহাকর্ষ তত্ত্বের ব্যতিক্রম ঘটাবে- তা সেকালের প্রখ্যাত বিজ্ঞানীরাও মানতে রাজী ছিলেন না, সাহসী হননি। এ ধরনের নিউটোনিয়ান সূত্রের কিছুটা ব্যতিক্রম আগেও দেখা যায় উনিশ শতকে ইউরেনাসের কক্ষ পথ বিশ্লেষণ করার সময়। কেউ কেউ নিউটোনিয়ান সূত্রের সত্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন রাখেন ,কেউ কেউ সৌরজগতে এমন কোনো গ্রহের অস্তিত্ব অনুভব করেছিলেন যা বিজ্ঞানীদের নিকট অজানা ছিল। এই অজ্ঞাত গ্রহের মহাকর্ষই ইউরেনাসকে সবলে টানছে। পরে দ্বিতীয় অনুমানটাই সঠিক বলে প্রমাণিত হলো।
অজ্ঞাত গ্রহ নেপচুন!
১৮৪৬ সালে নেপচুন নামের নতুন গ্রহ খুঁজে পাওয়া যায় নিউটনের সূত্র ব্যবহার করে অনুমান করা ঠিক ঠিক জায়গাতেই। ১৯৬২ সালের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ম্যাকডোনাল্ড অবজারভেটরিতে ৮২ ইন্চি সাইজের টেলিস্কোপ বসানো হয়েছিল। সেখানেই মার্কিন জ্যোতির্বিদ ভেরা রুবিন তাঁর দুই সহযোগির সঙ্গে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ঘূর্ণন নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এসময় এক অদ্ভূত ব্যাপার চোখে পড়ল রুবিনের। নিয়ম অনুযায়ী সাধারণতঃ সূর্য থেকে কোনো নক্ষত্র যত দূরে থাকে, সেটি চলাচল করে ততই ধীর গতিতে। বুধ সূর্যের নিকটতম গ্রহ হওয়ায় এটির ঘূর্ণন গতি তুলনামূলকভাবে বেশি। প্লুটোর গতি বুধের চাইতে ১০% ধীর। কারণ, প্লুটো সূর্য থেকে অনেক দূরে। কিন্তু ভেরা রুবিন ছায়াপথের নীল নক্ষত্রগুলো বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখেন নক্ষত্রগুলো ছায়াপথের চারপাশে সমান গতিতে ঘুরছে। বুধ, প্লুটোর মত কম-বেশি গতির তারতম্যে নয়। অর্থাৎ ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে নক্ষত্রগুলোর দূরত্ব তাদের গতির ওপর কোন প্রভাব ফেলছেনা। একে বলা হো ফ্ল্যাট রোটেশন কার্ভ যা নিউটোনিয়ান গতিসূত্রের বিধান মানছে না।
গবেষকেরা তবে কী খুঁজছেন?
বড়
বড় নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে আলো যেখানে বাঁক নিয়েছে কিংবা
দূরবর্তী ছায়াপথ থেকে আসা আলোর বদলে যাওয়ার ধরণ পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা
গুপ্ত বস্তুর সম্ভাব্য অবস্থান ধারণা করতে পারেন। এই পদ্ধতিকে বলা হয় উইক
গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং। জুরিখের গবেষকেরা এ কাজেই এ.আই ব্যবহার করে
মহাকাশের পদার্থগুলোর এক ধরণের মানচিত্র তৈরির চেষ্টা করছেন। প্রকল্পটির
আরেক গবেষক টমাশ ক্যাক প্রশ্যাক বলেন, ‘প্রচুর তথ্য থেকে এ.আই স্বয়ংক্রিয়ভাবে জটিল কিছু ফিল্টার তৈরি করে মানচিত্র থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে নেয়।’
এ.আইয়ের নিউরাল নেটওয়ার্কয়ের প্রশিক্ষণের জন্য গবেষকেরা কম্পিউটারে তৈরি ডেটা এতে ইনপুট দেন। অনেকটা মহাবিশ্বের সিম্যুলেশনের মতো। সিম্যুলেশন থেকে এ.আই. যা শিখছে, তাতে রাতের আকাশের ছবি থেকে গুপ্ত বস্তু পর্যবেক্ষণ করে মহাজাগতিক উপাত্ত সংগ্রহ সহজ হয়েছে। তবে সে জন্য যতটা সম্ভব নিখুঁত এবং বেশি পরিমাণ তথ্য ইনপুট দিতে হয়। আর এতে প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় এ.আই ৩০ শতাংশ বেশি নিখুঁত ফলাফল দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন গবেষকেরা। উল্লেখ্য, গবেষকেরা এ.আই-কে চিলির ভিএলটি সার্ভে টেলিস্কোপ থেকে সংগৃহীত তথ্য দেন। এতে মহাকাশের যে পরিমাণ অঞ্চলের তথ্য রয়েছে তা চাঁদের আয়তনের ২ হাজার ২০০ গুণ। প্রায় দেড় কোটি ছায়াপথের তথ্য রয়েছে যা সাধারণ কম্পিউটারে প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্ভব না। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের লুগানো শহরের সুইস ন্যাশনাল সুপারকম্পিউটিং সেন্টারের কম্পিউটার। দেশটির যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই সুপারকম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে। এই শক্তিশালী কম্পিউটার ঠাণ্ডা রাখার জন্য নিকটবর্তী লুগানো হ্রদ থেকে সেকেন্ডে ৪৬০ লিটার পানি সরবরাহ করতে হয়।
https://www.tab.com.bd/ai-search-dark-matter/সৃষ্টিজগতঃ সিন্ধু থেকে বিন্দু!
সৃষ্টির সর্বনিম্নতম
ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্রতা, সূক্ষ্ণাতি সূক্ষ্ণতা কোনটি? এটি জানার আগ্রহ
যেদিন থেকে মানুষের মনে জেগেছিল বলা যায় সেদিন থেকেই মূলতঃ পদার্থ বিজ্ঞানের
অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল। এর সূচনা করেছিলেন মূলতঃ প্রাচীন গ্রীক বিজ্ঞানী
ডেমোক্রিটাস অ্যাটম আবিস্কারের মধ্যদিয়ে। পরবর্তীতে অ্যারিস্টটল এটাকে
চতুর্মাত্রিক মাত্রিক রূপ দেন যথাঃ ১.মাটি ২.আগুন ৩. পানি, এবং ৪. বাতাস নামে। পক্ষান্তরে
মধ্যযুগে জাবির ইবনে হাইয়ান আল আরাবি পর্যায় সারণির মাধ্যমে এ ধারণার আধুনিকীকরণ
করেন। অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে জন ডালটন পরমাণুকে আরও শক্ত ভিত্তি দান করে প্রস্তাব
করেনঃ রাসায়নিক বস্তুসমূহ পরমাণু দিয়ে গঠিত। পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের মাধ্যমে ডালটন
এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন বলে পরমাণূ সম্পর্কে এটাই ছিল সর্বপ্রথম সত্যিকারের
বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব(প্রাগুক্ত পৃঃ ৪৩)। রাসায়নিক বিক্রিয়া সত্ত্বেও পরমাণু অবিকৃত থাকে । তাহলে কী পরমাণু বস্তুর একেবারে মৌলিক উপাদান? ১৮৯৬ সাল
পর্যন্ত মনে করা হতো পরমাণুই বস্তুর একেবারে মৌলিক উপাদান। ১৮৯৭ সালে বৃটিশ
বিজ্ঞানী জে.জে. থমসন তাঁর ক্যাথোড রশ্মি পরীক্ষার মাধ্যমে অআবিস্কার করেন
পরমাণুর অন্যতম কণা ইলেকট্রন। তার মানে পরমাণু একমাত্র মৌলিক কণা নয়; ইলেকট্রনও আছে তার সাথে। এতে থেমে ছিলেন না পরমাণু গবেষকরা। ১৯১৭ থেকে
১৯২৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ পরমাণু নিয়ে অনেকগুলো পরীক্ষা চালান নিউজিল্যান্ড
বংশোদ্ভূত বৃটিশ বিজ্ঞানী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড। আবিস্কার করেন পরমাণু কেন্দ্রের
নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াসে দেখা পেলেন প্রোটনের। ১৯২০ সালে রাদার
ফোর্ড প্রস্তাব করেন পরমাণুর কেন্দ্রে প্রোটনের সঙ্গে চার্জবিহীন আরেকটি কণা
(নিউট্রন?) আছে।
১৯৩২ সালে সে কণাটি ধরা পড়ে জেমস চ্যানউইকের পরীক্ষায়। এ জন্য ১৯৩৫ সালে জেমস
নোবেল পুরস্কার পান। এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয় পরমাণু ১. ইলেকট্রন ২. প্রোটন ৩. নিউট্রন-এই ৩টি
মৌলিক কণা দিয়ে পরমণু গঠিত। সংগত কারণে
প্রশ্ন উঠে ঃ তাহলে কি পরমাণুর এই তিনটি কণাই মহাবিশ্বের সবচেয়ে ছোট জিনিস?
এর চেয়ে ছোট জিনিস কি হতে পারে না?-এই
প্রশ্ন যাঁদের মাথায় চেপেছিল তন্মধ্যে মারে গেলম্যান এবং জর্জ জুইগ ছিলেন অন্যতম।
১৯৬৪ সালে এনারা প্রস্তাব করেন কোয়ার্ক মডেল। ১৯৬৪ সালের এক পরীক্ষায় দেখা যায় যে,
প্রোটন আসলে মৌলিক কণা নয়। এটি গঠিত অআরওঅনেক ছোট ছোট
বিন্দুসদৃশ কিছু কণা দিয়ে। রিচার্ড ফাইনম্যান এ কণার নাম দেন পারটন। মারে গেলম্যান
নামকরণ করেনঃ কোয়ার্ক। এ সময় দু ধরণের কোয়ার্ক বা পারটন আবিস্কৃত হয় ১. আপ
কোয়ার্ক ২. ডাউন কোয়ার্ক । ১৯৯৫ সালে সর্বশেষ টপ কোয়ার্ক আবিস্কার হয়। অতঃপি
১৯৯৬, ১৯৯৭ এবং ১৯৯৮ সালের মধ্যে যথাক্রমে ১. স্ট্রেন্জ
কোয়ার্ক ২. চার্ম কোয়ার্ক এবং ৩. বটম কোয়ার্ক । নিউট্রন ও প্রোটন-দুটোই কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত।
প্রোটনে থাকে ২টি অআপ কোয়ার্ক একটি ডাউন কোয়ার্ক। আর নিউট্রনে দুইটি ডাউন এবং
একটি আপ কোয়ার্ক। তার মানে প্রোটন ও নিউট্রন দুটো কণাই অমৌলিক। তবে পারমাণুর
কেন্দ্রের বাইরে থাকা ইলেকট্রন এখনও কোয়ার্কের মত মৌলিকই রয়েছে গেছে। শুধু তাই নয়, ইলেকট্রনের
সমগোত্রীয় আরও কিছু কণা আছে, যারা মৌলিক। এদের একক নাম
লেপটন। এরাও প্রধানতঃ দুই ভাগে বিভক্ত যথা ১. চার্জধারী এবং ২. চার্জ
নিরপেক্ষ। চার্জধারীরা দুই শ্রেণীর। চার্জধারীরা যথা ১. মিউন এবং ২.
টাউ এবং এবং চার্জবিহীনরা তিন শ্রেণীর যথাঃ ১. ইলেকট্রন নিউট্রিনো ২. মিউ
নিউট্রিনো এবং ৩. টাউ নিউট্রিনো।
মূলতঃ মৌলিক কণারা
আসলে ভৌত অর্থে কোনো বস্তুই নয়। তাই সে অর্থেই এদের আকার না থাকারই কথা। যদিও
বিদ্যুৎ চুম্বকীয় আকার নামে বিমূর্ত একটি ধারণা অআছে। (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা ৪৫)। তবে
নিউট্রন আর প্রোটনের একটা আকার বিজ্ঞানীরা ২০১৯ সালে দুটি আলাদা পরীক্ষার মাধ্যমে
অনুমান করতে সক্ষম হয়েছেন যার বর্ণনা নিম্নরূপঃ
ক) নিউট্রনঃ ব্যাসার্ধ শুন্য দশমিক ৮৫ ফেমোমিটার
এবং
খ) প্রোটনঃ ব্যাসার্ধ
শুন্য দশমিক ৮৩৩ ফেমোমিটার (দশমিকের পর ১৪টি শুন্য দিয়ে ১ (এক) লিখলে যে অংক দাঁড়ায়)।
তবে সবচেয়ে ছোট যে
কণা-বস্তুর ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা সম্ভাব্যতা অনুভব-উপলদ্ধি করছেন মানসচোখে
(অন্তর্দৃষ্টিতে) তার নামকরণ করা হয়েছে স্ট্রিং, এই তত্ত্বের নাম স্ট্রিং থিওরি।
স্ট্রিং থিওরির
প্রকারভেদঃমৌলিক কনাগুলোকে তাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মুলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
ক) এক শ্রেনির নাম বোসন খ) আরেক শ্রেনির নাম ফার্মিওন। প্রথম দিকে যে স্ট্রিং
থিওরি গঠন করা হয় তাকে বলা হত বোসনিক স্ট্রিং থিওরি।
স্ট্রিং থিওরীর মূল
লক্ষ্যঃস্ট্রিংগুলোর কোয়ান্টাম অবস্থা ও বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে প্রকৃতিতে
বিদ্যমান সকল মৌলিক কনিকার আচরণ ব্যাখ্যা করা স্ট্রিং থিওরীর মূল লক্ষ্য।
স্ট্রিং থিওরী দিতে যাচ্ছে পুরাতন পৃথিবীকে নতুন বিজ্ঞান উপহার!
কনাবাদি পদার্থবিদ্যার
স্ট্যান্ডার্ড মডেল যেসব কনিকাদের নিয়ে কাজ করে, স্ট্রিং থিওরি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই
এসব কনার সাথে চমৎকারভাবে মহাকর্ষের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করতে পারে। এ কারণে
বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে, মহাজাগতিক সবকিছুর তত্ত্ব হিসাবে
স্ট্রিং থিওরি সকল কাজের কাজী হওয়ার দাবী রাখে অর্থাৎ এই তত্ত্বের নিজস্ব গানিতিক
মডেলের সাহায্যে স্ট্রিং থিওরি প্রকৃতিতে বিদ্যমান চারটি মৌলিক বল, সকল প্রকার শক্তি ও পদার্থের যেকোনো অবস্থাকে ব্যাখ্যা করতে পারে। এই
তত্ত্বের অনুকল্পগুলো (হাইপোথিসিস) আজকাল কণাবাদী পদার্থবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বস্তুতঃ স্ট্রিং থিওরীর ধারণাগুলো আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ
হাতিয়ার এবং কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরি ও কোয়ান্টাম গ্রাভিটির (মহাকর্ষের
কোয়ান্টাম রুপ) সকল ধোঁয়াশা দূর করে আমাদের পুরাতন পৃথিবীতে এক নতুন
পদার্থবিজ্ঞান উপহার হয়ত দিতে যাচ্ছে।
আনুবীক্ষণিক জগতে অনিশ্চয়তা সূত্রের সত্যতা
আনুবীক্ষণিক জগতে অনিশ্চয়তা সূত্রের সত্যতা খুব ভালভাবে লক্ষ্য করা যায়।ইলেকট্রনের ভরবেগ সঠিকভাবে জানতে এমন ফোটন দরকার যার শক্তি কম বা দুর্বল, যাতে এটা ইলেকট্রনটির ভরবেগকে বিরক্ত করতে না করতে পারে। কিন্তু ঝামেলা হলো ফোটনের শক্তি এর কম্পাঙ্কের সমানুপাতিক। অর্থাৎ, কম শক্তির ফোটনের কম্পাঙ্ক কম তথা তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি হবে। এমন বড়সড় ফোটন ইলেকট্রনের অবস্থান ঠিকভাবে নির্ণয় করতে ব্যর্থ হবে, যেমন আমাদের হাত ব্যর্থ হয় টেবিলের অমসৃণ পৃষ্ঠকে অণুধাবন করতে। আবার আমরা যদি ছোট(তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কম তথা কম্পাঙ্ক বেশী) ফোটন ব্যবহার করি, তাহলে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মত, এটা ইলেকট্রনের অবস্থান ভালোভাবে নির্ণয় করলেও, এমন ফোটনের শক্তি বেশী থাকায় ইলেকট্রনের ভরবেগ পালটে দেবে। অর্থাৎ ইলেকট্রনের ভরবেগ নিশ্চয়তার সাথে কোনভাবেই নির্ণয় করা যায়না। প্লাংকের ধ্রুবক খুব ছোট বলে বাস্তব জীবনে অনিশ্চয়তা সূত্র আমরা অনুভব করি না বললেই চলে।কিন্তু আনুবীক্ষণিক জগতে অনিশ্চয়তা সূত্রের সত্যতা খুব ভালভাবে লক্ষ্য করা যায়।
ফোটন
ব্যবহার করে ভরবেগ নির্নয়ে অনিশ্চয়তার জন্য এই নীতির নাম অনিশ্চয়তা নীতি।
আর জার্মান পদার্থবিদ ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ এই মৌলিক নীতিটি আবিষ্কার করেন
তাই এর নাম "হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি"।
কোনো কণিকার অবস্থান এবং ভরবেগ, একইসাথে নিখুঁতভাবে জানা সম্ভব না। অবস্থান নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে গেলে ভরবেগের মানে ভুলের পরিমাণ বাড়বে, আবার ভরবেগ নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে গেলে অবস্থানের মানে ভুলের পরিমাণ বাড়বে -- এই নীতিটিকে অনিশ্চয়তা নীতি বলা হয়। জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ এই মৌলিক নীতিটি আবিষ্কার করেন।
বিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা
চিরায়ত বলবিজ্ঞান আমাদের চারপাশের স্থূল জগতের অনেক ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করতে সক্ষম
নিউটনীয় চিরায়ত (ক্ল্যাসিকাল) বলবিজ্ঞান আমাদের চারপাশের জগতের ঘটনাবলী অনেকটা নির্ভুল ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। আইজাক নিউটন ১৬৮৬ সালে তার বিখ্যাত বই Philosophiae Naturalis Principia Mathematica, সংক্ষেপে প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেম্যাটিকা-তে
চিরায়ত বলবিজ্ঞানের মূলসূত্রগুলি লিপিবদ্ধ করেন। এরপর প্রায় দুইশ বছর ধরে
এই সূত্রগুলিই পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের সমস্ত ঘটনাবলির ব্যখ্যার
কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। (উইকিপিডিয়া)
বলবিজ্ঞান প্রযুক্তির জড় জগতের ভৌত জ্ঞানসমূহকে মানুষের কাজে লাগানোর উপযোগী করে তৈরি করে থাকে। এজন্য অনেক সময় এই শাখাটিকে প্রকৌশল বা ফলিত বলবিজ্ঞান নামকরণ করা হয়ে থাকে। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে বলবিজ্ঞানই যন্ত্রের যান্ত্রিক গঠন এবং যন্ত্রসমূহের ব্যবহার ও প্রয়োগবিধি নির্দেশ করে। যন্ত্র প্রকৌশল, মহাকাশ প্রকৌশল (aerospace), পুর প্রকৌশল, জৈব বলবিজ্ঞান, structural engineering, materials engineering, biomedical engineering ইত্যাদি অধ্যয়নে বলবিজ্ঞান সহায়ক।
নিউটনীয়ান বল বিজ্ঞানের প্রকারভেদ নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ নিয়ে বলবিজ্ঞানের ভিত রচিত হয়: • নিউটনীয় বলবিজ্ঞান প্রধানত গতি (সৃতিবিজ্ঞান) এবং বলের (গতিবিজ্ঞান) মৌলিক আলোচনা করে। • ল্যাগ্রাঞ্জীয় বলবিজ্ঞান: (Lagrangian mechanics) • হ্যামিল্টনীয় বলবিজ্ঞান: । • তারা: ছায়াপথ ইত্যাদির গতি সংক্রান্ত বলবিজ্ঞান। • জ্যোতির্গতিবিজ্ঞান: নভোযান চালনা। • শব্দবিজ্ঞান: • স্থিতিবিজ্ঞান: যান্ত্রিক সাম্যাবস্থা। • প্রবাহী বলবিজ্ঞান, তরল পদার্থের গতি। • Continuum mechanics, mechanics of continua (both solid and fluid) • তরল স্থিতিবিজ্ঞান (hydraulics): সাম্যাবস্থায় তরল। • ফলিত বলবিজ্ঞান • জৈব বলবিজ্ঞান • পরিসাংখ্যিক বলবিজ্ঞান • (সূত্রঃ https://bn.wikipedia.org/wiki/
কণা পদার্থবিজ্ঞান
কণা
পদার্থবিজ্ঞান পদার্থবিদ্যার একটি প্রধান শাখা যার কাজ হল পদার্থ এবং তার
বিকিরণের মৌলিক উপাদান এবং তাদের মধ্যে মিথষ্ক্রিয়া নিয়ে গবেষণ করা । উইকিপিডিয়া
উনিশ শতকের প্রথম দিকে জন ডাল্টন পরমাণুবাদকে বেশ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে বলেছিলেন "সকল পদার্থ পরমাণু নামক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত।"
বিশ্ব চলে নিয়মে নিয়মতান্ত্রিক নিউটনীয় বল বিদ্যার বিধিবদ্ধতায় বিশ্ব ব্যবস্থাইজাক নিউটন ১৬৮৬ সালে তাঁর বিখ্যাত বই PhilosophiaeNaturalis Principia Mathematica, সংক্ষেপে প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেম্যাটিকা-তে চিরায়ত (Classical) বলবিজ্ঞানের মূলসূত্রগুলি লিপিবদ্ধ করেন। এতে আমাদের চারপাশের অপারণমাবিক (স্থুল/জড়) জগতের অনেক ঘটনা কিভাবে প্রায় নির্ভুল ব্যাখ্যা প্রদান সক্ষম তা তুলে ধরা হয়েছে। এরপর প্রায় দুইশ বছর ধরে এই সূত্রগুলিই পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের সমস্ত ঘটনাবলির ব্যাখ্যার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। থিবীর সার্বিক কর্মকান্ড মূলতঃ পৃথিবীর বুকে, পৃথিবীর উপরে এবং পৃথিবীর ভূগর্ভে বিদ্যমান- যা কখনও নির্ধারিত, সুনির্দিষ্ট নিশ্চিত নিয়ম-নীতিতে, কখনও অনিশ্চিত সম্ভাবনায় আবার কখনও অনির্ধারিত, অনির্দিষ্ট, হঠাৎ, আকস্মিক এবং অকল্পনীয়ভাবে ঘটে থাকে। নিশ্চিত নিয়মাবলী বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় চিরায়ত (ক্ল্যাসিকাল)। ৩৬৫ দিনের প্রত্যেক দিবসের সূর্যোদয়ের যেমন সুনির্দিষ্টতা রয়েছে তেমনি সূর্যাস্তেরও সুনির্দিষ্টতা রয়েছে যার কারণে চির স্থায়ী ক্যালেন্ডার তৈরি সম্ভবপর হয়েছে। এতে শতভাগ নিশ্চয়তা দেয়া যেতে পারে যে, বছরের কোন্ দিনের কোন্ তারিখে সূর্য কত ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ডে উদিত হবে এবং কত ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ডে অস্ত যাবে। অনুরূপ কোন দিনের কত ঘন্টা মিনিট, সেকেন্ডে জোয়ার উঠবে, কত ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ডে ভাটা নামবে তারও সুনির্দিষ্টতা রয়েছে। এমনকি পৃথিবীর আকাশে কোন্ ধুমকেতু কোন্ তারিখ পর্যন্ত কখন কতক্ষণ দৃশ্যমান থাকবে তারও আগাম পূর্বাভাষ আধুনিক সৌরজাগতিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে সম্ভবপর। সম্ভবপর বছরের কোন্ মাসের কোন্ তারিখের কত ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ডে সূর্য গ্রহণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে এবং কত ঘন্টা মিনিট, সেকেন্ডে তা ছাড়বে তা-ও হলফ করে বলা যায়।। যা নিউটনীয় বলবিজ্ঞান তথা নিশ্চয়তাবাদের সমার্থক বটে। চিরায়ত (ক্ল্যাসিকাল) নিউটনীয় বলবিজ্ঞান আমাদের চারপাশের জড় জগতের ঘটনাবলী অনেকটা নির্ভুলভাবে ব্যাখ্যা করতে সক্ষআইজাক নিউটন ১৬৮৬ সালে তার বিখ্যাত বই Philosophiae Naturalis Principia Mathematica, সংক্ষেপে প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেম্যাটিক-তে চিরায়ত বলবিজ্ঞানের মূলসূত্রগুলি লিপিবদ্ধ করেন। এরপর প্রায় দুইশ বছর ধরে এই সূত্রগুলিই পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের সমস্ত ঘটনাবলির ব্যাখ্যার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। (উইকিপিডিয়া)।
উদাহরণস্বরূপ, কোন্ ট্রেন কয়টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে- তা অনেকটা নিশ্চিত বলা যত সহজ; ঢাকা পৌঁছার সুনির্দিষ্ট সময় হলফ করে বলা তত সহজ নয়। কারণ, শত শত কিলোমিটারের দীর্ঘ পথযাত্রায় লাইনচ্যুতি, ইন্জ্ঞিন বিকলসহ নানান কারণে স্থানে স্থানে যাত্রা বিরতি ঘটতে পারে। সুতরাং, নিউটনীয় বলবিদ্যায় নির্ধারিত সময়ে গাড়ীর যাত্রা শুরু করা সম্ভব হলেও হাইজেনবার্গীয় অনিশ্চয়তা তত্ত্বে ট্রেনের অকুস্থলে যথাসময়ে পৌঁছা অনিশ্চিত। গাড়ীর ঘন্টাপ্রতি মাইলেজ নির্ধারিত/জানা থাকা সত্ত্বেও উপরোক্ত অনিবার্যকারণবশতঃ যথাসময়ে পৌঁছা নিশ্চিত নয়। সুতরাং, ট্রেনের যথাস্থানে পৌঁছার জন্য অন্তত তিনটি শর্ত প্রয়োজন তা হচ্ছে ১. গাড়ী নির্ধারিত সময়ে স্টেশন ছেড়ে যাওয়া ২. গাড়ীর ইন্জ্ঞিন সচল থাকা এবং ৩. গাড়ীর গতি সুনির্দিষ্ট হওয়া।
নতুন বিজ্ঞানের নতুন কথা
১৯শ শতকের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরা
বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে আবিষ্কার করেন যে, চিরায়ত
বলবিজ্ঞানের ধারণাগুলি অত্যন্ত ক্ষুদ্র বস্তুর ওপরে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না, পৃথিবীর বুকে
যা ঘটে, মহাকাশে তা ঘটছে না। বিশেষ করে আলো
সরল রেখায় গমনের তত্ত্বটি পৃথিবীতে প্রযোজ্য হলেও মহাকাশে প্রযোজ্য হচ্ছে না। মহাকর্ষীয়
বিষয়টি খোদ নিউটনকে ভাবিয়ে তুলেছিল যখন পৃথিবীর বুকে যে মধ্যাকর্ষনের টানে গাছ
থেকে আপেল মাটিতে পড়েছিল, সেই একই মধ্যাকর্ষন বলে সূর্য পৃথিবীকে কিংবা পৃথিবী
চাঁদ-কে টেনে না নেয়ার ব্যাপারটি লক্ষ্য করে। বিশেষ করে ১৯শ শতকের শেষের দিকে এসে পরমাণুর ইলেক্ট্রনীয় গঠন ও আলোর ধর্মের
উপর কিছু আবিষ্কার চিরায়ত বলবিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হচ্ছিল না।
উল্লেখ্য, ১৯০৫ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন বুঝতে
পারেন যে, চিরায়ত (ক্ল্যাসিকাল) বলবিজ্ঞানের ধারণাগুলি
অত্যন্ত দ্রুত গতিবেগের অর্থাৎ আলোর গতিবেগের কাছাকাছি বেগের বস্তুর ওপর প্রয়োগ
করা যায় না। এরি পরিপ্রেক্ষিতে পরমাণুর ইলেক্ট্রনীয় গঠন ও আলোর ধর্মের
ব্যাখ্যা করার জন্য আইনস্টাইন আবিস্কার করেন আপেক্ষিকতাভিত্তিক
বলবিজ্ঞান নামের তত্ত্ব। অন্যদিকে ১৯০০ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে বেশ
কিছু পদার্থবিজ্ঞানী (মাক্স প্লাংক, নিল্স বোর, আলবার্ট আইনস্টাইন, ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ, লুই দ্য ব্রয়ি, এর্ভিন শ্র্যোডিঙার, প্রমুখ)
কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান উদ্ভাবন করেন যা পুরাতন পৃথিবীতে নতুন বিজ্ঞানের সূচনা করে।
নতুন বিজ্ঞানের নতুন আইন
চিরায়ত (ক্ল্যাসিকাল) বল বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বহির্ভূত দুর্বোধ্য
পরমাণুর ইলেক্ট্রনীয় গঠন ও আলোর ধর্ম তত্ত্ব
আবিষ্কারের পাশাপাশি ম্যাক্স প্ল্যাংকের কোয়ান্টাম মেকানিকস, আলবার্ট আইনস্টাইনের ও স্পেশাল ও
জেনারেল রিলাটিভিটি থিওরী, হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তাবাদ পর পর
আবিস্কারের ফলে পদার্থ বিজ্ঞানে যে বৈপ্লবিক
পরিবর্তন দেখা দেয় তাতে নতুন নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজন দেখা দেয়। এরি
পরিপ্রেক্ষিতে বিংশ শতাব্দীতে পদার্থবিজ্ঞানের আইন প্রণয়নের জন্য দুটি
তাত্ত্বিক কাঠামো আবির্ভূত হয়। প্রথম কাঠামোটি হচ্ছে আলবার্ট আইনস্টাইনের
আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব (General Relativity Theory) যা মহাকর্ষ বল এবং
স্থান ও সময় গঠনকে ব্যাখ্যা করে। দ্বিতীয় কাঠামোটি হচ্ছে কোয়ান্টাম মেকানিক্স যা
সম্ভাব্যতার নীতি নির্দেশিত মাত্রার সূত্র বা তত্ত্ব।
দার্শনিক ডেমোক্রিটাস ঈসাব্দপূর্ব ৪০০ অব্দে সর্বপ্রথম পদার্থের ক্ষুদ্রতম ‘কণা’ (atom) নিয়ে মতবাদ পোষণ করেন। ‘অ্যাটোমাস’ (atomas) শব্দ থেকে এটম (atom) শব্দটির বুৎপত্তি যার অর্থ অবিভাজ্য (non divided । অ্যারিষ্টটলের মতে, পদার্থসমূহ নিরবচ্ছিন্ন (continuous) একে যতই ভাঙ্গা হোক না কেন, পদার্থেরকণাগুলো ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতর হতে থাকবে। বিজ্ঞানী রাদার ফোর্ড তার পরীক্ষালব্ধ ফলাফল থেকে বলেন যে,গ্রীক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস ঈসাব্দপূর্ব ৪০০ অব্দে সর্বপ্রথম পদার্থের ক্ষুদ্রতম ‘কণা’ (atom) নিয়ে মতবাদ পোষণ করেন। ‘অ্যাটোমাস’ (atomas) শব্দ থেকে এটম (atom) শব্দটির বুৎপত্তি যার অর্থ অবিভাজ্য (non divided । অ্যারিষ্টটলের মতে, পদার্থসমূহ নিরবচ্ছিন্ন (continuous) একে যতই ভাঙ্গা হোক না কেন, পদার্থেরকণাগুলো ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতর হতে থাকবে। বিজ্ঞানী রাদার ফোর্ড তার পরীক্ষালব্ধ ফলাফল থেকে বলেন যে, পরমাণু হলো ধনাত্মক আধান ও ভর একটি ক্ষুদ্র জায়গায় আবদ্ধ’। তিনি এর নাম দেন ‘নিউক্লিয়াস’। প্রোটন ও ইলেকট্রন নিয়ে গঠিত হয় পরমাণু কেন্দ্র-এই কেন্দ্রকেবলা হয় নিউক্লিয়ার্স। নিউক্লিয়ার্স এর চার পাশে ঘুরতে থাকে পরমাণুর ইলেকট্রন।
কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান (ইংরেজি: Quantum mechanics) বা কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান (ইংরেজি: Quantum physics) আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা-যা পরমাণু এবং অতিপারমাণবিক কণার/তরঙ্গের মাপনীতে পদার্থের আচরণ বর্ণনা করে। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানকে ব্যবহার করে বিশাল কোন বস্তু যেমন তারা ও ছায়াপথ সম্পর্কিত বিষয় ব্যাখ্যা করা যায় তেমনি স্ট্যান্ডার্ড মডেলভিত্তিক বিশ্ব সৃষ্টিতত্ত্বমূলক মহা বিস্ফোরণ (বিগ ব্যাং) এর ঘটনাও ব্যাখ্যা করা যায়।
উল্লেখ্য, পদার্থবিজ্ঞানের যেসব ক্ষেত্র ক্লাসিক্যাল (চিরায়ত) নিউটনীয় বলবিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না, সেসব ক্ষেত্রে পদার্থগুলির জড়তাত্ত্বিক ভৌত (অস্বাভাবিক) আচরণ সম্পর্কে ধারণা পাবার জন্য পদার্থবিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান ব্যবহার করে থাকেন। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান রসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স, কণা পদার্থবিজ্ঞান, ন্যানোপ্রযুক্তি এবং প্রযুক্তিবিদ্যার আধুনিকায়নের ভিত্তি। বিজ্ঞানের কোয়ান্টামভিত্তিক এই শাখাগুলো বিগত পঞ্চাশ বছরব্যাপী পৃথিবীকে রাতারাতি এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করেছে। (সূত্রঃhttps://bn.wikipedia.org/wiki//কোয়ান্টাম_বলবিজ্ঞান)।
এক নজরে কোয়ান্টামের প্রকৃতি-বৈশিষ্ট্য
►কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানকে ব্যবহার করে বিশাল কোনো বস্তু যেমন তারা ও ছায়াপথ এবং মহাবিস্ফোরণ সংক্রান্ত বিশ্বতত্ত্বমূলক ঘটনার সুক্ষ্ণতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা যায়।
►পদার্থবিজ্ঞানের সুক্ষ্ণতাত্ত্বিক যেসব ক্ষেত্রে চিরায়ত নিউটনীয় বলবিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না, সেসব ক্ষেত্রে পদার্থগুলির ভৌত আচরণ সম্পর্কে ধারণা পাবার জন্য পদার্থবিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান ব্যবহার করে থাকেন।
►পারমাণবিক অথবা তার চেয়েও ছোট মাপের কোনো ভৌত ব্যবস্থায়, খুব নিম্ন অথবা খুব উচ্চ শক্তিতে, অথবা অতিশীতল তাপমাত্রায় চিরায়ত এবং কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের বিশ্লেষণের মধ্যে প্রায়শই পার্থক্য দেখা যায়।
►কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান রসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, ইলেক্ট্রনিক্স, কণা পদার্থবিজ্ঞান, ন্যানোপ্রযুক্তি এবং প্রযুক্তিবিদ্যার আধুনিক উন্নয়নের ভিত্তি, এবং বিজ্ঞানের এই শাখাগুলো বিগত পঞ্চাশ বছরে পৃথিবীকে প্রায় সম্পূর্ণভাবে রূপান্তরিত করেছে।
বিজ্ঞান যা পারে
প্রকৃতিতে এত এত কণা। কিন্ত্ত কণাগুলি কী দিয়ে তৈরি কেউ জানে না। বিজ্ঞানীরা শুধু জানে কণাগুলি প্রাকৃতিকভাবে কোন্ পদ্ধতি-প্রক্রিয়ায় কীভাবে সৃষ্টি বা উদ্ভব। বিজ্ঞানীরা কখনও ডেমোক্রিটাসের মাধ্যমে জেনেছে যে , এসব বস্ত্ত কণারা অ্যাটম দিয়ে তৈরি। অ্যারিস্টটলের মাধ্যমে জেনেছে এই মহাবিশ্ব মাটি, আগুন, বাতাস এবং পানি দ্বারা সৃষ্ট। জাবের ইবনে হায়ানের মাধ্যমে জেনেছে মার্কারি (পারদ) নামে, আরেকটা সালফার। দিমিত্রি মেন্ডেলিফ কর্তৃক প্রণীত মৌলিক পদার্থসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম বিশ্লেষণপূর্বক মৌল সমূহের পর্যায়ভিত্তিক প্রথম পর্যায় সারণী, চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটা রমন প্রণীত দ্বিতীয় পর্যায় সারণী রমন ইফেক্ট তত্ত্বের মাধ্যমে।
বিজ্ঞান যা পারে না
প্রকৃতিতে এত এত কণা। কিন্ত্ত কণাগুলি কী দিয়ে তৈরি বিজ্ঞানীরা আজও জানেন না। তাই বিজ্ঞানীদের নিঃসংকোচ স্বীকারোক্তিঃ বিজ্ঞান না পারে আদি, আসল (খাঁটি-বিশুদ্ধ), অকৃত্রিমভাবে অণু-পরমাণু পরিমাণ কিছু সৃষ্টি করতে অথবা না পারে তা পুরোপুরি ধ্বংস করতে।
এ প্রসঙ্গে আলবার্ট আইনস্টাইন বলেনঃ পদার্থ একেবারে চুপসে যেতে পারে না। একসময় সূক্ষ্ণ বিন্দুতে গিয়ে থেমে যাবে পদার্থটি যাকে পদার্থ বিজ্ঞানে পরম বিন্দু বা সিঙ্গুলারিটি বলা হয়।
প্রাণ-প্রাণীর কথা
মানব দেহ গড়ে প্রায় ৮০ ট্রিলিয়ন কোষ নিয়ে গঠিত। প্রতিটি কোষ পালন করে তাদের নিজস্ব ভূমিকা। এসব কোষের কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন। বাতাস থেকে অক্সিজেন নাকের মাধ্যমে দেহের ফুসফুসে প্রবেশ করে লোহিত রক্ত কণিকায় পৌঁছে। রক্ত সন্চালনের মাধ্যমে এই লোহিত কণিকা দেহের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে। রক্তের ৪৫ শতাংশই লোহিত কণিকা। রক্তের বাকী ৫৫ শতাংশ-কে বলা হয় প্লাজমা-যাতে রয়েছে ১০ ভাগের মতো গ্যাসীয় উপাদান, পুষ্টি উপাদান আর বর্জ্য পদার্থ। লোহিত কণিকাকে বলা হয় হিমোগ্লোবিন। আয়রণ বা লৌহ কণিকার উপাদানে হিমোগ্লোবিন গঠিত। হিমোগ্লোবিনের কারণে রক্ত লাল বর্ণ হয়।
আইনস্টাইন মনে করেন, সব ধরণের শক্তিই হলো মহাকর্ষের উৎস। কারণ সব শক্তিরই একটা কার্যকর ভর রয়েছে। (বিজ্ঞানচিন্তা, জানুয়ারি, ২০২১,পৃষ্ঠা ৬৩)।
আইনস্টাইনের ভরশক্তির সমীকরণ
বস্তু এবং শক্তিঃ জমে থাকা শক্তি জমাটবদ্ধ বস্তুর মতই (আইনস্টাইন)।
“ভর এবং শক্তিঃ সব শক্তিরই একটা কার্যকর ভর রয়েছে” (আইনস্টাইন)। (বিজ্ঞানচিন্তা, জানুয়ারি, ২০২১,পৃষ্ঠা ৬৩)।
“ভর ভেক বদল করে শক্তিতে রূপান্তিরত হয়” (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০,পৃষ্ঠা ২০)।
“মহাকর্ষীয় ভর বলে আমরা যেটাকে জানি, যার কারণে আমাদের ভারী ও হালকা অনুভূতি হয়, সেটা আসলে ওজন (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০, বর্ষ ৪, সংখ্যা ০৬, পৃষ্ঠা ২০)।
মহাকর্ষ বল শুন্য কোনো স্থানের কল্পনা করাও অসম্ভব (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০,পৃষ্ঠা ২১)।
“মহাকর্ষ বলের প্রাবল্য যেখানে কম, সেখানে আপনার ওজন কম হবে, নিজেকে তত হালকা মনে করবেন আপনি। আর মহাকর্ষ প্রাবল্য খুব বেশি যেখানে, সেখান থেকে পা তুলতেই আপনি হিমশিম খাবেন” (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০,পৃষ্ঠা ২১)।
“পরমাণু তৈরি হয় ইলেকট্রন আর প্রোটন দিয়ে। অন্য দিকে প্রোটন-নিউট্রন তৈরি হয় কোয়ার্ক দিয়ে” (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০, বর্ষ ৪, সংখ্যা ০৬, পৃষ্ঠা ২১)।
“সব মৌলিক পদার্থের পরমাণুর ভেতর ইলেকট্রন ও প্রোটনের সংখ্যা এক নয়, প্রতিটির আলাদা” (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০, বর্ষ ৪, সংখ্যা ০৬, পৃষ্ঠা ২১)।
“তাই এক মৌলের পরমাণুর সঙ্গে আরেক মৌলের পরমাণুর ভরের পার্থক্য দেখা দেবে এটা নিশ্চিত” (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০, বর্ষ ৪, সংখ্যা ০৬, পৃষ্ঠা ২১)।
“পরমাণুকে ভাঙলে শেষ পর্যন্ত যা পাওয়া যাবে তা হচ্ছে কোয়ার্ক আর ইলেকট্রন” (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০, বর্ষ ৪, সংখ্যা ০৬, পৃষ্ঠা ২১)।
কোয়ার্ক আর ইলেকট্রন আসলো কোত্থেকে?
“পরমাণু জগতে এত এত কণা, কিন্তু এসব কণা কি দিয়ে তৈরি কেউ জানে না” (বিজ্ঞানচিন্তা)।
মহাকর্ষ
অনেক বড় পরিসরে মহাকর্ষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার বিপুল ভরের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ এই বল (বিজ্ঞানচিন্তা)
গ্রহ-নক্ষত্র ও ছায়াপথের চলাফেরাতে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলের বড় কোনো ভূমিকা নেই (বিজ্ঞানচিন্তা)
আইনস্টাইন মনে করেন, সব ধরণের শক্তি হলো মহাকর্ষের উৎস। কারণ, সব শক্তিরই একটা কার্যকর ভর রয়েছে (বিচি, জানুয়ারি ২০২১, পৃঃ ৬৩)।
মহাকর্ষ বাদে অন্য তিনটি বলের মধ্যে এক ধরণের প্যাটার্ণ দেখা যায় (বিচি নভেম্বর, ২০২১, পৃঃ ৫১)।
দেখা যাচ্ছে, নানা দিক দিয়ে মহাকর্ষ বেশ অস্বাভাবিক। তাহলে প্রশ্ন আসে মহাকর্ষ এ রকম আলাদা কেন? এর একমাত্র উত্তরঃ আমরা জানি না (বিচি নভেম্বর, ২০২১, পৃঃ ৫১)।
বিজ্ঞানীদের দাবী, এমন প্রশ্ন রয়েছে যার উত্তর এ বিশ্বে পাওয়া যাবে না।
মহাকর্ষ
►নিউটনের সূত্রমতে সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে মহাকর্ষ বল এমনভাবে থাকে যেন অদৃশ্য কোনো দড়ি দিয়ে এই বস্ত্ত দু'টিকে বেঁধে রাখার ফলে সূর্যের চারপাশের কক্ষপথে চিরকালের জন্য বাধা পড়ে পৃথিবী (বিচি প্রাগুক্ত ৬৩)
►আপেক্ষিকতার সাধারণতত্ত্ব চূড়ান্তভাবে প্রণয়নের আগেই অআইনস্টাইনবুঝতে পারেন যে, স্থান-কালের বক্রতার কারণে দুই নক্ষত্রের অআলো সূর্যের পাশ দিয়ে পৃথিবীতে অআসার সময় তার গতিপথ বেঁকে যায়। এতে স্থান কিছুটা বেঁকে যাওয়ায় অআলোও বেঁকে চলে। আপেক্ষিকতার সাধারণতত্ত্বের সারমর্ম হলোঃ বস্ত্ত স্থান-কালকে কিভাবে বাঁকতেহবেঅআর বক্রতা স্থান-কাল-বস্তুকে বলে কীভাবে চলতে হবে (বিচি প্রাগুক্ত ৬৩)
►আইনস্টাইনের তত্ত্ব মতে,বক্র স্থান-কালই হলো মহাকর্ষ। অআমাদের স্থান চারমাত্রিক।কিন্ত্ত ত্রিমাত্রিক জীব হওয়ায় কারণে স্থান কালের এইউপত্যকাকে অআমরা বুঝতে পারি না। সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর গতি ব্যাখ্যা করতে আমাদের তাই এতকাল মহাকর্ষের মতো একটা বস্ত্ত উদ্ভাবন করতে হয়েছে (বিচি প্রাগুক্ত ৬৩)
রহস্যময় মহাকর্ষের সঠিক ব্যাখ্যাকী? এই বল দূর্বল কেন? কেন অন্য বলগুলো মতো নয়? এর কারণ এমনও হতে পারে,মহাকর্ষ হয়তো বিশেষ বল ।
মহাকর্ষকে অন্য বলের মতো হতে হবে কিংবা একটি মাত্র তত্ত্ব দিয়ে সব কিছু ব্যাখ্যা করতে হবে এমনটা নাও হতে পারে। বড় দৃষ্টিভঙ্গির দিকে অআমাদের মন খোলা রাখতে হবে। কারণ, মহাবিশ্বের মৌলিক কিছু সত্য সম্পর্কে আমরা এখনো অন্ধকারে রয়ে গেছি (টানে সবাইকে কিন্ত্ত জড়ায় না, (বিচি, নভেম্বর, ২০১৯, বর্ষ ৬, সংখ্যা ২, পৃষ্ঠা৫৪)।
(সি.আই.আর.এন.এন.মনে করেঃ মহাকর্ষের মৌলিক সত্য এটাও হতে পারে যে, মহাকর্ষ চাপে সবাইকে কিন্ত্ত টানে না)
আয়রণ বা লৌহ কণিকা শুধু রক্তে নয়, দেহেরও অন্যতম খনিজ উপাদান। মানব দেহে এত পরিমাণ আয়রণ বা লৌহ কণিকা থাকে যদ্বারা একটি বড় মাপের পেরেক তৈরি সম্ভব যা দ্বারা একজন মানুষকে গেঁথে আটকানো যাবে বড়শিঁর মাছের মতো করে। মাটিতেও রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম বা চৌম্বকীয় উপাদান। মানব দেহেও বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলে কারণে কিংবা অন্য কারণে হোক মানব দেহেও ম্যাগনেট রয়েছে। ফলে পৃথিবীতে আটকে রাখার জন্য মাটির উপাদানগত ভূমিকা এবং দেহের উপাদান অভিন্ন হওয়ায় মাটি কখনও দেহকে আকর্ষণ করতে পারে না। না আয়রণিক না ম্যাগনেটিক কোনো ভাবে নয়। তাহলে আমাদের ভূত্বকে লেগে থাকার ক্ষেত্রে একমাত্র ভূমিকা দেখা যায় দৈহিক ওজন বা ভরের।
দু'টি কণাকে একসঙ্গে রাখা হলে সেগুলোর মধ্যকার মহাকর্ষ বল প্রায় শূন্য হতে দেখা যায়। আর তখন সেখানে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বল, সবল ও দূর্বল পারমাণবিক বল অনেক বেশি শক্তিশালী ।(বিচি, নভেম্বর, ২০২১, পৃঃ ৫৩)।
ব্ল্যাকহোল
পরম বিন্দু কেবল কোনো নক্ষত্রের সমাপ্তিই নির্দেশ করে না, বরং পুরো মহাবিশ্বের গঠনের সূচনা সম্পর্কেও মৌলিক ধারণার নির্দেশক (বিচি, মার্চ, ২০২০, পৃষ্ঠা ৪০)।
বিশাল ভরের কোনো নক্ষত্র জীবনের শেষ দশায় এলে এদের ভেতরে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া কমে যেতে থাকে। তখন ভেতরের বস্ত্ত কণাগুলো পরস্পরের খুব কাছাকাছি এসে পড়ে। ফলে আরও বাড়তে থাকে এদের মধ্যে ক্রিয়াশীল মহাকর্ষ বল। এতে বস্ত্ত কণাগুলো অআরও কাছাকাছি অআসতে শুরু করে। এ প্রক্রিয়া দীর্ঘ মেয়াদে চলতেই থাকে। এক সময় অবস্থা এমন হয় যে, গোটা নক্ষত্রের সব ভর একটা বিন্দুতে এসে মিলিত হয়। সেই বিন্দুটির মহাকর্ষ বল তখন এতটাই বেশি হয় যে, এর চারপাশের স্থান-কাল বেঁকে যায় অসীম মাত্রায়। সে মাত্রায় ১০ লাখ ব্যাসার্ধের সূর্য শোয়ার্জসিল্ড ব্যাসার্ধে দাঁড়াবে মাত্র ৩ কিলোমিটারে। পৃথিবীর আকৃতি হবে মাত্র ১ সেন্টিমিটারে সূঁচের আগার ন্যায় ক্ষুদ্র (তথ্যসূত্রঃ বিচি অক্টোবর, ২০১৯, বর্ষ ৪, সংখ্যা-০১, পৃষ্ঠা ৩৫)।
অসীম ভরের এক পরম বিন্দু, যেখানে ভেঙ্গে পড়ে পদার্থ বিজ্ঞানের সব সূত্র (তথ্যসূত্রঃ বিচি অক্টোবর, ২০১৯, বর্ষ ৪, সংখ্যা-০১, পৃষ্ঠা ৩৫)।
উল্লেখ্য, একসময় গুটিয়ে ফেলা হবে মহাবিশ্ব। রাখা হবে ডান পার্শ্বে। দরাজ কন্ঠ বলাহবেঃ কোথায় আজ দোর্দন্ডপ্রতাপশালীরা?
স্থান-কালের বক্রতা অনেক গভীর থেকে গভীরতর হলে এবং ক্রমেই অসীম হয়ে গেলে, সেখানে স্থান ও কালের প্রচলিত নিয়ম-কানুন আর প্রয়োগ করা যায় না।(বিচি মার্চ, ২০২০, পৃষ্ঠা ৪০)।
ব্ল্যাকহোল
মহাকাশের কোনো বস্ত্ত যদি একটা নির্দিষ্ট ক্রান্তীয় ব্যাসার্ধে সংকুচিত করে ফেলা সম্ভব হয় তাহলে স্থান-কাল এত বেশি বেঁকে যাবে, যেটা আর নিছক উপত্যকার চেহারায় থাকে না। হয়ে যায় একটা গর্ত। যাকে বলা যা মহাকাশের তলা বিহিন কুয়া। ক্রান্তিয় এই পরম সংকুচিত ব্যাসার্ধকে বলা হয় শোয়ার্জসিল্ড ব্যাসার্ধ। ১০ লাখ ব্যাসার্ধের সূর্য শোয়ার্জসিল্ড ব্যাসার্ধে দাঁড়াবে মাত্র ৩ কিলোমিটারে। পৃথিবীর আকৃতি হবে মাত্র ১ সেন্টিমিটারে। কার্ল শোয়ার্জসিল্ড আইনস্টাইনের সদ্য প্রকাশিত সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ব্যবহার করে ১৯১৫সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বপ্রথম ব্ল্যাকহোলের ধারণা দেন।
২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২২ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের লাইগো ও ইতালির ভার্গো-২ মহাকর্ষ তরঙ্গের ডিটেক্টরে একটি তরঙ্গ ধরা পড়েছে। এ তরঙ্গটি আগে শনাক্ত করা তরঙ্গ থেকে আলাদা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, একটি কৃষ্ঞ গহব্বর ও একটি নিউট্রন স্টারের সংঘর্ষ থেকে এ তরঙ সৃষ্টি হয়েছে, (বিচি মে, ২০১৯)।
►আমরা যা জানি, যা বুঝি কিংবা যা কল্পনা, চিন্তা-ভাবনা করি তা তাত্ত্বিক। কিন্ত্ত বাস্তবে তা না-ও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ ব্ল্যাকহোল বিজ্ঞান মনস্ক এমন ব্যক্তির নিকট এই শব্দটি অজানা থাকার কথা নয়। ব্ল্যাক হোল শব্দগুচ্ছটা বেশ সরল মনে হয়। বাস্তবে মহাজাগতিক এ বস্ত্তটির প্রকৃতি সম্পর্কে কল্পনা করাও কঠিন না, (বিচি, মার্চ, ২০১৯, বর্ষ ৬, সংখ্যা ২, পৃষ্ঠা ৩৯)।
যখন স্থান ও কালের প্রচলিত নিয়ম-কানুন প্রয়োগ করা যায় না।
স্থান-কালের বক্রতা অনেক গভীর থেকে গভীরতর হলে এবং ক্রমেই অসীম হয়ে গেলে, সেখানে স্থান ও কালের প্রচলিত নিয়ম-কানুন আর প্রয়োগ করা যায় না।(বিচি মার্চ, ২০২০, পৃষ্ঠা ৪০)।
আলোর চাইতে অধিক গতি অর্জন করতে অসীম পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন....”
আইনস্টাইন তাঁর বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে বলেনঃ “কোনো বস্ত্তর গতি আলোর গতির যত কাছাকাছি যাবে, ততই মনে হবে সেটা যেন ভারী হয়ে যাচ্ছে। যদি সেই বস্ত্ত অআলোর গতির একদম কাছাকাছি চলে যায়, তাহলে সেটা অসীম ভর সম্পন্ন বস্ত্তর মতোই ভারী হয়ে যাবে। তখন এর চেয়ে আরও গতি অর্জন করতে হলে অসীম পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন।”
CIRNN মনে করে আইনস্টাইনের এ মন্তব্যে নিহিত আছে শর্ত সাপেক্ষে আলোর প্রচলিত মাত্রার (সেকেন্ডে ১,৮৬০০০ মাইল) অতিরিক্ত মাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা তত্ত্ব। ২০১২ সালে সার্ণ কর্তৃক ২৭ কিঃমি পরিধির কণা চূর্ণকরণ সাইক্লোটন যন্ত্র ল্যার্জ হ্যাড্রনে ৬০, হাজার কম্পিউটার এবং ৫০০ কোটি পাউন্ড ব্যয়ে লক্ষ গুণ সৌর তাপমাত্রা অর্জনে সেকেন্ডে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কম্পন সৃষ্টি করে বিলিয়ন বিলিয়ন প্রোটন কণার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটিয়ে প্রায় আলোর গতি উৎপন্ন করে কৃত্রিমভাবে হিগস বোসন কণা আবিস্কার করা হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, আরও উন্নত বৃহৎ যন্ত্রের সাহায্যে অসীম শক্তিতে প্রোটন কণার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটালে আইনস্টাইনের E=mc2 তত্ত্বে বর্ণিত আলোর নির্ধারিত গতি অতিক্রম করা সম্ভব। এ ধারণায় বর্তমানে ওয়ার্ম হোল, র্যাপ ড্রাইভের মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে মহাবিশ্ব ভ্রমণে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী ।
CIRNN আরও মনে করে আলোর গতি অতিক্রমকারী সম্ভাব্য কণাটি হতে পারে নিউট্রিনো জাতীয়। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সার্ণ কর্তৃক অপেরা প্রজেক্টের আওতায় এক গবেষণায় জানা যায় যে, নিউট্রিনোর গতি আলোর অন্ততঃ ৬০ ন্যানো সেকেন্ড বেশি। পরে অবশ্য বলা হয় এটি ঘটেছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে।
উল্লেখ্য, মহাবিশ্বে নিউট্রিনো নামের একটি অদ্ভূতুড়ে ও অসামাজিক কণা আছে। কয়েক আলোকবর্ষ জুড়ে পুরু সিসার পাত ভেদ করেও এই কণা নির্বিঘ্নে অনায়াসে চলে যেতে পারে ।(বিচি নভেম্বর, ২০২১, বর্ষ ৬, সংখ্যা ২, পৃঃ ৫৩)।
কোনো কোনো বিজ্ঞানী মনে করেন, আলোর গতির চেয়ে বেশি গতি সম্পন্ন বস্ত্ত কণা থাকতে পারে।
স্ট্যান্ডার্ড মডেল
বর্তমানে প্রমাণিত স্ট্যান্ডার্ড মডেল প্রকৃতির চারটি মৌলিক বলের তিনটিকে যথা বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বল, সবল এবং দূর্বল নিউক্লিয় বল-কে একীভূত করতে পারলেও মহাকর্ষ এখনো আলাদাই রয়ে গেছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলের কণা ফোটন, সবল নিউক্লিয় বলের কণা গ্লুয়ন এবং দূর্বল নিউক্লিয় বলের কণা w, w+, zo আবিস্কৃত হলেও বিজ্ঞানীদের ধারণাকৃত মহাকর্ষ বলের কণা গ্র্যাভিটন এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত হয়নি। মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো যোগ হয়েছে ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক ম্যাটার। (বিচি জুন, ২০১৯, পৃষ্ঠা ৩৮)।
সি.আই.আর.এন.এন মনে করে আইনস্টাইনের এ মন্তব্যে নিহিত আছে শর্ত সাপেক্ষে আলোর প্রচলিত মাত্রার অতিরিক্ত মাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা তত্ত্ব। ২০১২ সালে সার্ণ কর্তৃক ২৭ কিঃমি পরিধির কণা চূর্ণকরণ সাইক্লোটন যন্ত্র ল্যার্জ হ্যাড্রনে ৬০, হাজার কম্পিউটার এবং ৫০০ কোটি পাউন্ড ব্যয়ে লক্ষ গুণ সৌর তাপমাত্রা অর্জনে সেকেন্ডে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কম্পন সৃষ্টি করে বিলিয়ন বিলিয়ন প্রোটন কণার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটিয়ে প্রায় আলোর গতি উৎপন্ন করে কৃত্রিমভাবে হিগস বোসন কণা আবিস্কার করা হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, আরও উন্নত বৃহৎ যন্ত্রের সাহায্যে অসীম শক্তিতে প্রোটন কণার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটালে অআইনস্টাইনের ই.এমসি স্কয়ারের অআলোর নির্ধারিত গতি অতিক্রম করা সম্ভব। এ ধারণায় বর্তমানে ওয়ার্ম হোল, র্যাপ ড্রাইভের মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে মহাবিশ্ব ভ্রমণে বিজ্ঞানীরা সক্রিয় ।
কোনো কোনো বিজ্ঞানী মনে করেন, আলোর গতির চেয়ে বেশি গতি সম্পন্ন বস্ত্ত কণা থাকতে পারে। (বিচি প্রাগুক্ত পৃঃ ১৯)
সি.আই.আর.এন.এন মনে করে সম্ভাব্য কণাটি হতে পারে নিউট্রিনো। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সার্ণ কর্তৃক অপেরা প্রজেক্টের আওতায় এক গবেষণায় জানা যায় যে, নিউট্রিনোর গতি আলোর অন্ততঃ ৬০ ন্যানো সেকেন্ড বেশি। পরে অবশ্য বলা হয় এটি ঘটেছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে।
মহাবিশ্বে নিউট্রিনো নামের একটি অদ্ভূতুড়ে ও অসামাজিক কণা আছে। কয়েক আলোকবর্ষ জুড়ে পুরু সিসার পাত ভেদ করেও এই কণা নির্বিঘ্নে অনায়াসে চলে যেতে পারে ।(বিচি নভেম্বর, ২০২১, বর্ষ ৬, সংখ্যা ২, পৃঃ ৫৩)।
প্রাণ-প্রাণীর কথা
মানব দেহের কোষের অভ্যন্তরে নিহিত কতিপয় খনিজ উপাদান হচ্ছে পটাশিয়াম, সালফার, সোডিয়াম, ক্লোরিন, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি। প্রত্যেক খনিজ পদার্থই ধনাত্মক কিংবা ঋণাত্মক আধান (চার্জ) দ্বারা গঠিত।
অতি উচ্চশক্তির চৌম্বক ক্ষেত্র পৃথিবীর বস্ত্ত পদার্থের অণু-পরমাণুর পরতে পরতে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে থাকে। বিশেষ করে এই চৌম্বক ক্ষেত্রের মান একটি নির্দিষ্ট মানের চেয়ে বেশি হলে তা যে কোনো পরমাণুর চৌম্বক ভ্রামক বা মোমেন্টের ওপর সরাসরি কাজ করে এবং একেবারে অবিন্যস্ত চৌম্বক ভ্রমকগুলোকেও একই দিকে ঘুরিয়ে নিতে পারে। এর ফলে পদার্থটি অস্থায়ী চৌম্বকত্ব লাভ করে। সেমতে বিচরণশীল সকল প্রাণী কম বেশি চুম্বকত্বের অধিকারী। (বিজ্ঞানচিন্তাঃ মার্চ ২০২০, পৃষ্ঠা ৮৬)।
আমাদের দেহের জৈব রাসায়নিক উপাদান এনজাইম শত শত অ্যামিনো অ্যাসিডের সমন্বয়ে গঠিত। অনেক এনজাইমের মধ্যে ধাতব পরমাণু আছে। ওই ধাতব পরমাণুই ঠিক করে দেয় এনজামটি কিভাবে ক্রিয়াশীল হবে দেহে। আমাদের দেহের অস্থিমজ্জা বা হাঁড়ে প্রতি সেকেন্ডে ২০ লক্ষেরও বেশি লোহিত কণা তৈরি হয়। রক্তের কাজ অনেক। ক) দেহের প্রতি কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া খ) দেহের প্রতি কোষে বিদ্যমান কার্বন ডাই অক্সাইড পরিস্কার করা গ) খাবার হজমে সহায়তা করা ঘ) দেহে পুষ্টি যোগানো ঙ) শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখা চ) ফাগো সাইট কোষের মাধ্যমে অ্যান্টি বডির কাজ করা ছ) বাইরের ক্ষতিকর জীবানু মেরে ফেলা ইত্যাদি (বিজ্ঞান চিন্তা)।
পরমাণুতে ইলেকট্রন আর প্রোটনগুলো বিদ্যুৎ চুম্বকীয় বলের সুতায় বাঁধা।
পৃথিবীর ভূত্বকে আমাদের দেহ লেগে/আটকে থাকার রহস্য কী?
পৃথিবীতে যেভাবে আমরা অতি স্বাচ্ছন্দে পা ফেলে হাঁটতে পারি, এগিয়ে যাই। অ্যাপেলো -১১ এর নভোচারিরা সেরূপ স্বাচ্ছন্দে হাঁটতে পারেন নি। পীঠে ভারি নভো সাজসরন্জঞাম থাকা সত্ত্বেও তারা পিঙপঙ বলের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে চলছিলেন । কারণ পৃথিবীর চাইতে চাঁদের ভর অন্ততঃ ৮.৫০ (আট দশমিক পাঁচ শূন্য) নিউটন (প্রায় আশি ভাগের এক ভাগ) কম। চাঁদের অভিকর্ষ ত্বরণ মাত্রা ১.৬ অর্থাৎ পৃথিবীর ছয় ভাগের একভাগ। চাঁদের নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্রও পৃথিবীর চাইতে তুলনামূলক কম (আমাদের ছোট চাঁদ, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান)।
আয়রণ বা লৌহ কণিকা শুধু রক্তে নয়, দেহেরও অন্যতম খনিজ উপাদান। মানব দেহে এত পরিমাণ আয়রণ বা লৌহ কণিকা থাকে যদ্বারা একটি বড় মাপের পেরেক তৈরি সম্ভব যা দ্বারা একজন মানুষকে গেঁথে আটকানো যাবে বড়শিঁর মাছের মতো করে। মাটিতেও রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম বা চৌম্বকীয় উপাদান। মানব দেহেও বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলে কারণে কিংবা অন্য কারণে হোক মানব দেহেও ম্যাগনেট রয়েছে। ফলে পৃথিবীতে আটকে রাখার জন্য মাটির উপাদানগত ভূমিকা এবং দেহের উপাদান অভিন্ন হওয়ায় মাটি কখনও দেহকে অআকর্ষণ করতে পারে না। না আয়রণিক না ম্যাগনেটিক কোনো ভাবে নয়। তাহলে আমাদের ভূত্বকে লেগে থাকার ক্ষেত্রে একমাত্র ভূমিকা দেখা যায় দৈহিক ওজন বা ভরের।
দু'টি কণাকে একসঙ্গে রাখা হলে সেগুলোর মধ্যকার মহাকর্ষ বল প্রায় শূন্য হতে দেখা যায়। অআর তখন সেখানে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বল, সবল ও দূর্বল পারমাণবিক বল অনেক বেশি শক্তিশালী ।(বিচি, নভেম্বর, ২০২১, পৃঃ ৫৩)।
►স্ট্যান্ডার্ড মডেলের সাহায্যে আধুনিক কসমোলজি মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও ক্রম বিকাশ বুঝতে সাহায্য করার পাশাপাশি পদার্থ ও শক্তির নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে অবজারভেশনাল কসমোলজির বিকাশ শুরু হতে থাকে টেলিস্কোপের সাহায্যে মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে টেলিস্কোপের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ মহাকাশ যান পাঠিয়ে মহাকাশে হতে প্রচুর উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। এই উপাত্তগুলোকে তত্ত্বীয় কাঠামোয় বিশ্লেষ করার জন্য গড়ে উঠল ভৌত বা ফিজিক্যাল কসমোলজি (সূত্রঃ বিজ্ঞান চিন্তা, পৃঃ ১৬)।
কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেল
►মহাবিশ্বকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উপস্থাপন করার সর্বাধুনিক মডেল হলো ল্যামডা কোল্ড ডার্ক ম্যাটার মডেল। মহাবিশ্বের তিনটি প্রধান উপাদান হলো ১) গুপ্ত শক্তি ২) গুপ্ত বস্ত্ত এবং ৩) সাধারণ পদার্থ ও শক্তি (এ যাবৎ আবিস্কৃত ফোটন, কোয়ার্ক-ইলেক্ট্রনসহ ১৭ টি মৌলিক কণা, প্রতিকণা ইত্যাদিসহ)। এই মডেলের অপর নামক কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেল।
ব্যাক গ্রাউন্ড রেডিয়েশন
►মহাবিশ্ব প্রসারিত হলে আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। আলোর তরঙ্গ শক্তি কমে যায়। ফলে অআলোর কোয়ান্টা ফোটন অদৃশ্য মাইক্রোওয়েভে পরিণত হয় যা আধুনিক কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেলে Cosmic Microwave back ground Radiation নামে পরিচিত। এই রেডিয়েশনের কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে জানা যায় বিগ ব্যাংয়ের মাধ্যমে হাইয়েস্ট এনার্জেটিক রেডিয়েশন হতে কী পরিমাণ শক্তি বা পদার্থ মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাছাড়া আরও জানা যায়, মহাবিশ্বের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করার পাশাপাশি পদার্থ ও শক্তির নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। (বিচি, পৃঃ ১৬)।
রহস্যময় মহাকর্ষের সঠিক ব্যাখ্যা কী?
প্রকৃতিতে এত এত কণা। কিন্ত্ত কণাগুলি কী দিয়ে তৈরি কেউ জানে না। বিজ্ঞানীরা শুধু জানে কীভাবে তৈরি-এতটুকুন পর্যন্ত। তাই বিজ্ঞানীদের নিঃসংকোচ স্বীকারোক্তিঃ বিজ্ঞান না পারে অণু-পরমাণু পরিমাণ কিছু সৃষ্টি করতে না পারে পুরোপুরি ধ্বংস করতে। এ প্রসঙ্গে আলবার্ট আইনস্টাইন বলেনঃ পদার্থ একেবারে চুপসে যেতে পারে না। একসময় সূক্ষ্ণ বিন্দুতে গিয়ে থেমে যাবে পদার্থটি যাকে পদার্থ বিজ্ঞানে পরম বিন্দু বা সিঙ্গুলারিটি বলা হয়।
ব্ল্যাকহোল
মহাকাশের কোনো বস্ত্ত যদি একটা নির্দিষ্ট ক্রান্তীয় ব্যাসার্ধে সংকুচিত করে ফেলা সম্ভব হয় তাহলে স্থান-কাল এত বেশি বেঁকে যাবে, যেটা আর নিছক উপত্যকার চেহারায় থাকে না। হয়ে যায় একটা গর্ত। যাকে বলা যা মহাকাশের তলা বিহিন কুয়া। ক্রান্তিয় এই পরম সংকুচিত ব্যাসার্ধকে বলা হয় শোয়ার্জসিল্ড ব্যাসার্ধ। ১০ লাখ ব্যাসার্ধের সূর্য শোয়ার্জসিল্ড ব্যাসার্ধে দাঁড়াবে মাত্র ৩ কিলোমিটারে। পৃথিবীর আকৃতি হবে মাত্র ১ সেন্টিমিটারে। কার্ল শোয়ার্জসিল্ড আইনস্টাইনের সদ্য প্রকাশিত সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ব্যবহার করে ১৯১৫সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বপ্রথম ব্ল্যাকহোলের ধারণা দেন।
২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২২ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের লাইগো ও ইতালির ভার্গো-২ মহাকর্ষ তরঙ্গের ডিটেক্টরে একটি তরঙ্গ ধরা পড়েছে। এ তরঙ্গটি আগে শনাক্ত করা তরঙ্গ থেকে আলাদা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, একটি কৃষ্ঞ গহব্বর ও একটি নিউট্রন স্টারের সংঘর্ষ থেকে এ তরঙ সৃষ্টি হয়েছে, (বিচি মে, ২০১৯)।
►আমরা যা জানি, যা বুঝি কিংবা যা কল্পনা, চিন্তা-ভাবনা করি তা তাত্ত্বিক। কিন্ত্ত বাস্তবে তা না-ও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ ব্ল্যাকহোল বিজ্ঞান মনস্ক এমন ব্যক্তির নিকট এই শব্দটি অজানা থাকার কথা নয়। ব্ল্যাক হোল শব্দগুচ্ছটা বেশ সরল মনে হয়। বাস্তবে মহাজাগতিক এ বস্ত্তটির প্রকৃতি সম্পর্কে কল্পনা করাও কঠিন না, (বিচি, মার্চ, ২০১৯, বর্ষ ৬, সংখ্যা ২, পৃষ্ঠা ৩৯)।
স্ট্যান্ডার্ড মডেল
বর্তমানে প্রমাণিত স্ট্যান্ডার্ড মডেল প্রকৃতির চারটি মৌলিক বলের তিনটিকে যথা বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বল, সবল এবং দূর্বল নিউক্লিয় বল-কে একীভূত করতে পারলেও মহাকর্ষ এখনো আলাদাই রয়ে গেছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলের কণা ফোটন, সবল নিউক্লিয় বলের কণা গ্লুয়ন এবং দূর্বল নিউক্লিয় বলের কণা w, w+, zo আবিস্কৃত হলেও বিজ্ঞানীদের ধারণাকৃত মহাকর্ষ বলের কণা গ্র্যাভিটন এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত হয়নি। মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো যোগ হয়েছে ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক ম্যাটার। (বিচি জুন, ২০১৯, পৃষ্ঠা ৩৮)।
ভরশক্তি
বস্ত্তর প্রকৃত ভর জানা খুব সহজ যদি তার শক্তির মান জানা যায়। অথবা যদি অআপনার জানা থাকে বস্ত্তর ভর তাহলে সেটার সঙ্গে অআলোর বেগের বর্গগুণ করলে পাওয়া যাবে তার শক্তি। শক্তি অআর ভরের মধ্যে স্পষ্ট একটা সম্বন্ধ দেখিয়ে দিলেন আইনস্টাইন (বিচি মার্চ, ২০২০, পৃঃ ২২)।
মহাকর্ষ
অনেক বড় পরিসরে মহাকর্ষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অআবার বিপুল ভরের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ এই বল (বিচি..)
গ্রহ-নক্ষত্র ও ছায়াপথের চলাফেরাতে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলের বড় কোনো ভূমিকা নেই (বিচি..)।
অআইনস্টাইন মনেএ করেন, সব ধরণের শক্তি হলো মহাকর্ষের উৎস। কারণ, সব শক্তিরই একটা কার্যকর ভর রয়েছে (বিচি, জানুয়ারি ২০২১, পৃঃ ৬৩)।
মহাকর্ষ বাদে অন্য তিনটি বলের মধ্যে এক ধরণের প্যাটার্ণ দেখা যায় (বিচি নভেম্বর, ২০২১, পৃঃ ৫১)।
দেখা যাচ্ছে, নানা দিক দিয়ে মহাকর্ষ বেশ অস্বাভাবিক। তাহলে প্রশ্ন অআসে মহাকর্ষ এ রকম অআলাদা কেন? এর একমাত্র উত্তরঃ অআমরা জানি না (বিচি নভেম্বর, ২০২১, পৃঃ ৫১)।
বিজ্ঞানীদের দাবী, এমন প্রশ্ন রয়েছে যার উত্তর এ বিশ্বে পাওয়া যাবে না।
মহাবিশ্বের শুরু যেভাবে
কসমোলজিতে মহাবিশ্বের শুরু বিগ ব্যাং থেকে। এই তত্ত্বমতে, বিগ ব্যাংয়ের শুরুতে মহাবিশ্ব ছিল প্রচন্ড উত্তপ্ত এবং ঘনত্ব ছিল অত্যন্ত বেশি। চার লাখ বছর ধরে ঠান্ডা হতে হতে তাপমাত্রা তিন হাজার ডিগ্রি কেলভিনে নেমে এল। তখন ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের সঙ্গে মিথস্ত্রিয়া করে তৈরি হলো পরমাণু। শুরুতে হলো হাইড্রোজেন হিলিয়াম ইত্যাদি। পরে আরও ভারি পরমাণু। কোনো চার্জিত কণা অবশিষ্ট রইল না। অচার্জিত কণা ফোটন রয়ে গেল আলাদা হয়ে। আলোর কণা ফোটন কোনো বাধা ছাড়াই মহাবিশ্বের সব খানে ছুটে বেড়াতে লাগল। এই আলো সবখানে ছড়িয়ে পড়ল (বিজ্ঞানচিন্তা, অক্টোবর, ২০১৯, পৃষ্ঠা ১৭)।
ফোটন
ফোটন হলো এক গুচ্ছ ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক এনার্জি। আলো যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সমন্বয়ে গঠিত, সে ক্ষুদ্রাংশটাই ফোটন। ফোটনকে অনেক সময় ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক এনার্জির কোয়ান্টা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কোনো পদার্থের পরমাণুর ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক উচ্চতর কক্ষপথ থেকে তার স্বাভাবিক নিম্নতর কক্ষপথে নেমে এলে সে এক গুচ্ছ শক্তির আকারে ফোটন বিচ্ছুরিত করে। ফোটন খালি চোখে আলোক রশ্মিরূপে দেখা যায়।
ইলেক্ট্রিক ফটো ইফেক্ট
আলো বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ বিশেষ। বস্ত্তর ওপর আলোকপাতের ফলে বস্ত্ত থেকে ইলেকট্রন নির্গত হওয়ার ঘটনাকে বলা হয় বিদ্যুৎ চুম্বকীয় বিকিরণ বা ইলেক্ট্রিক ফটো ইফেক্ট। (বিজ্ঞানচিন্তা, মার্চ, ২০২০, পৃষ্ঠা ১৪)।
কোয়ান্টাম তত্ত্ব
►প্রতিটি প্রোটন একেকটি কোয়ান্টাম কণা। প্রতিটির আছে তরঙ্গ ফাংশন। বৈদ্যুতিক চার্জ তাদের দূরে রাখলেও এরা তরঙ্গমালা প্রবাহিত করে একে অপরের কাছে চলে আসবে-তার একটা অশূন্য সম্ভাবনা থাকে (বিচি পৃষ্ঠা ৫২)।
►কোয়ান্টাম টানেলিং না থাকলে তাই নক্ষত্ররা আলো দিতে পারতো না। মহাবিশ্বের বেশির ভাগ অংশ হতো অন্ধকার, শীতল। আর সে জন্যই গ্রহ-নক্ষত্ররা শুধু সার্বিক আপেক্ষিকতা দিয়ে চলছে, বিষয়টি ঠিক তা নয়। বড়-ক্ষুদ্র সব জগতের কাজেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে কোয়ান্টাম তত্ত্ব। (প্রাগুক্ত পৃঃ ৫২)।
উল্লেখ্য, নিউটনীয় বল বিদ্যা অনুসারে বস্ত্তর আদি বেগ ও বেগ বৃদ্ধির হার জানা থাকলে আমরা বলতে পারব, নির্দিষ্ট সময়ের পরে বস্ত্তটি কোথায় থাকবে। কিন্ত্ত কোয়ান্টাম বল বিদ্যায় নিশ্চিত করে বলা যায় না, বস্ত্ত কণাটি কত সময় পরে কোথায় চলে যাবে।
Comments