Riazul Jannah ﷺ
হজরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম।
════════
ইমরান বিন বদরী
আবুল আম্বিয়া হজরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে আশাকরি কম বেশি সবার জানা আছে।তার পরেও একটু করে লিখে নিজেকে ধন্য করার চেষ্টা।ইব্রাহিম- আরবিতে ابراهيم,হিব্রুতে אַבְרָהָם ।ইতিহাসবিদদের- মতে তিনি ১৯৫ বছর জীবিত ছিলেন।তাঁর চার পুত্র ছিলেন হজরত নবী ইসমাইল (আ.)হজরত ইসহাক (আ.)মাদয়ান এবং মাদায়েন।মতান্তরে তাঁর ৬-১২জন পুত্র ছিলেন।তিনি ই একমাত্র নবী আব্রাহাম (Abraham) নামে যাকে প্রত্যেক কিতাবী ধর্মের লোকেরা সমভাবে মানেন।তিনি ছিলেন ‘আবুল আম্বিয়া’ বা নবীগণের পিতা।তাঁর স্ত্রী সারার পুত্র হযরত ইসহাক্ব-এর পুত্র ইয়াকূব (আঃ)-এর বংশধর ‘বনু ইসরাঈল’ নামে পরিচিত এবং অপর স্ত্রী হাজেরার পুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশে জন্ম নেন শেষনবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।যাঁর অনুসারীগণ ‘উম্মতে মুহাম্মাদী’বা ‘মুসলিম উম্মাহ’নামে পরিচিত।আমরা-ই উম্মতে মুহাম্মদী (মুসলমান) আমাদের নবী খাতামান নাবীয়্যিন অর্থাৎ শেষ নবী যার পরে আর নবী আসার কোনো পথ খোলা নাই।ইসলাম তথা আল্লাহতালার মনোনিত ধর্মের প্রেরনের আগে আগেকার নবীরা একত্ববাদের প্রচার করে গেলও আমাদের নবী শেষে এসে তার পরিপূর্ণতা দিয়েছেন।তাইতো বিদায় হজ্জের ভাসনে আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র জবানেপাকের মাদ্যমে মহান আল্লাহ মানব সম্প্রদায়কে সুন্দর ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন: الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا আজ আমি তোমাদের জন্য দ্বীন,তথা জীবন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি,তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছি এবং জীবন ব্যবস্থা হিসাবে ইসলামকে তোমাদের জন্য পছন্দ বা মনোনিত করেছি (সুরা মায়িদাহ ৩)
ইসলামই কেবলমাত্র সত্য ধর্ম এবং এ ধর্মই স্রষ্টা কর্তৃক ও তার মনোনিত প্রবর্তক দ্বারা পৃথিবীব্যাপি সমাধিত গৃহীত ও পরিচালিত করেছেন।এখানে আরেকটি কথা বলছি কথাটি মনেরাখবেন,মিরাজ থেকে ফিরে এসে আমার নবী যখন একটার পর একটা বর্ণনা দিচ্ছেন তখন হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের সম্পর্কে বলেন-আমার দৈহিক গঠন ও চেহরা মুবারক ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের ন্যায়।(মিশকাত ৫৮৬৬)।
হজরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তার পুত্র হজরত ঈসমাইল (আ:) নিয়ে পবিত্র কাবা ঘর আল্লাহর জামিনে নির্মান করেছিলেন।যে পাথরে দাড়াইয়ে কাবা ঘর নির্মান করেছিলেন তা এখনো আল্লাহর পবিত্র কাবা ঘরের পাশেই রয়েছে।যাকে মকামে ইব্রাহীম বলা হয়।আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজের প্রাণ প্রিয় সন্তান কে কুরবানি দিতে চেয়েছিলেন বলেই আজ আমরা কুরবানি করছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে ভালবেসে আমার নবী রহমাতুল্লীল আলামীন তাঁর উম্মতরা যেন তাকে স্মরণ করেন সে জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাতে দরুদে ইব্রাহীমে মাধ্যমে দোয়ার বিধান করে দিয়েছেন।উল্লেখ্য যে,হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের ২৫টি সূরায় ২০৪টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
আল্লাহ পাক হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলেন,
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا
আপনি এই কিতাবে ইব্রাহীমের কথা বর্ণনা করুন।নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী
নবী। (সূরা মারইয়াম ৪১)
অন্যত্রে বলেন,
وَمَنْ أَحْسَنُ دِينًا مِّمَّنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لله وَهُوَ مُحْسِنٌ واتَّبَعَ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَاتَّخَذَ اللّهُ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلاً
যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে সৎকাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করে,যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন, তার চাইতে উত্তম ধর্ম কার? আল্লাহ ইব্রাহীমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন।(সূরা নিসা ১২৫)
#অগ্নিপরীক্ষাঃ
একত্ববাদ তথা মহান রব্বুল আলামীনের তৌহিদের প্রচার করতে গিয়ে ইব্রাহীম খলিলুল্লাহকে এক পরীক্ষায় পড়তে হয়েছিলো। অহংকারী নমরুদ ভেবেছিলো তাকে উপাস্য হিসেবে স্বীকার করবে কিন্তু না তিনি নির্ভয়ে বলেদিলেন,رَبِّيَ الَّذِيْ يُحْيِـيْ وَيُمِيْتُ আমার রব তিনি,যিনি মানুষকে হায়াত এবং মৃত্যুদান করেন।এভাবে বিভিন্ন পূজা বিরোধী যুক্তিতে নমরুদ যখন পরাস্ত হচ্ছে তখন ফন্দি করে হযরত ইব্রাহীমকে আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার হুকুম দেন।তারা অগ্নিকুন্ড তৈরী করে যখন হযরত ইব্রাহীমকে নিক্ষেপ করছেন তখন আল্লাহর প্রিয় এই বন্ধু বলে উঠেন, حَسْبُنَا اللّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ আমার জন্য আল্লাহ তা'য়ালাই যথেষ্ট।তিনি কত সুন্দরইনা তত্বাবধায়ক(সূরা আলে ইমরান ১৭৩)।(একই প্রার্থনা ওহোদ যুদ্ধে আমার নবী রহমাতুল্লীল আলামীন করেছিলেন) অগ্নিপরীক্ষার এই কঠিন মুহূর্তে পুরস্কার স্বরূপ সাথে আল্লাহর নির্দেশ এল-
يَا نَارُ كُونِيْ بَرْداً وَّسَلاَماً عَلَى إِبْرَاهِيمَ
হে আগুন! ঠান্ডা হয়ে যাও এবং ইব্রাহীমের উপরে শান্তিদায়ক হয়ে যাও (সূরা আম্বিয়া ৬৯)।
অবশেষে মূর্তিপূজারী ও তারকাপূজারীদের সাথে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মুক্তি পেয়ে ফিরে আসেন এবং এভাবে আল্লাহ তা'য়ালা কাফিরদের সমস্ত কৌশল বরবাদ করে দেন।ফলে একত্ববাদের নবী হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের দাওয়াত ও তার প্রভাব সকলের নিকটে পৌঁছে গিয়েছিল।
═══════════
#হজরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর গুরুত্বপূর্ণ দোয়া গুলি উপস্থাপন করলাম:-সূরা ইব্রাহিম এর আয়াত (৩৫থেকে ৪১)
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ اجْعَلْ هَـذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعْبُدَ الأَصْنَامَ
যখন ইব্রাহীম বললেনঃ হে পালনকর্তা, এ শহরকে শান্তিময় করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তান সন্ততিকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন।
رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِّنَ النَّاسِ فَمَن تَبِعَنِي فَإِنَّهُ مِنِّي وَمَنْ عَصَانِي فَإِنَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে পালনকর্তা, এরা অনেক মানুষকে বিপথগামী করেছে। অতএব যে আমার অনুসরণ করে, সে আমার এবং কেউ আমার অবাধ্যতা করলে নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
رَّبَّنَا إِنِّي أَسْكَنتُ مِن ذُرِّيَّتِي بِوَادٍ غَيْرِ ذِي زَرْعٍ عِندَ بَيْتِكَ الْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُواْ الصَّلاَةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِّنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَارْزُقْهُم مِّنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
হে আমাদের পালনকর্তা, আমি নিজের এক সন্তানকে তোমার পবিত্র গৃহের সন্নিকটে চাষাবাদহীন উপত্যকায় আবাদ করেছি; হে আমাদের পালনকর্তা, যাতে তারা নামায কায়েম রাখে। অতঃপর আপনি কিছু লোকের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করুন এবং তাদেরকে ফলাদি দ্বারা রুযী দান করুন, সম্ভবতঃ তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে
رَبَّنَا إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِي وَمَا نُعْلِنُ وَمَا يَخْفَى عَلَى اللّهِ مِن شَيْءٍ فَي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاء
হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি তো জানেন আমরা যা কিছু গোপনে করি এবং যা কিছু প্রকাশ্য করি। আল্লাহর কাছে পৃথিবীতে ও আকাশে কোন কিছুই গোপন নয়।
الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِي وَهَبَ لِي عَلَى الْكِبَرِ إِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ إِنَّ رَبِّي لَسَمِيعُ الدُّعَاء
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আমাকে এই বার্ধক্যে ইসমাঈল ও ইসহাক দান করেছেন নিশ্চয় আমার পালনকর্তা দোয়া শ্রবণ করেন।
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلاَةِ وَمِن ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاء
হে আমার পালনকর্তা, আমাকে নামায কায়েমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা, এবং কবুল করুন আমাদের দোয়া।
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।
#সম্মানিত বন্ধুরা "আসুন সবাই মিলে ইসলামের রাহে উম্মতে মুহাম্মদীর মুক্তির কথা বলি "
════════
ইমরান বিন বদরীআবুল আম্বিয়া হজরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে আশাকরি কম বেশি সবার জানা আছে।তার পরেও একটু করে লিখে নিজেকে ধন্য করার চেষ্টা।ইব্রাহিম- আরবিতে ابراهيم,হিব্রুতে אַבְרָהָם ।ইতিহাসবিদদের- মতে তিনি ১৯৫ বছর জীবিত ছিলেন।তাঁর চার পুত্র ছিলেন হজরত নবী ইসমাইল (আ.)হজরত ইসহাক (আ.)মাদয়ান এবং মাদায়েন।মতান্তরে তাঁর ৬-১২জন পুত্র ছিলেন।তিনি ই একমাত্র নবী আব্রাহাম (Abraham) নামে যাকে প্রত্যেক কিতাবী ধর্মের লোকেরা সমভাবে মানেন।তিনি ছিলেন ‘আবুল আম্বিয়া’ বা নবীগণের পিতা।তাঁর স্ত্রী সারার পুত্র হযরত ইসহাক্ব-এর পুত্র ইয়াকূব (আঃ)-এর বংশধর ‘বনু ইসরাঈল’ নামে পরিচিত এবং অপর স্ত্রী হাজেরার পুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশে জন্ম নেন শেষনবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।যাঁর অনুসারীগণ ‘উম্মতে মুহাম্মাদী’বা ‘মুসলিম উম্মাহ’নামে পরিচিত।আমরা-ই উম্মতে মুহাম্মদী (মুসলমান) আমাদের নবী খাতামান নাবীয়্যিন অর্থাৎ শেষ নবী যার পরে আর নবী আসার কোনো পথ খোলা নাই।ইসলাম তথা আল্লাহতালার মনোনিত ধর্মের প্রেরনের আগে আগেকার নবীরা একত্ববাদের প্রচার করে গেলও আমাদের নবী শেষে এসে তার পরিপূর্ণতা দিয়েছেন।তাইতো বিদায় হজ্জের ভাসনে আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র জবানেপাকের মাদ্যমে মহান আল্লাহ মানব সম্প্রদায়কে সুন্দর ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন: الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا আজ আমি তোমাদের জন্য দ্বীন,তথা জীবন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি,তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছি এবং জীবন ব্যবস্থা হিসাবে ইসলামকে তোমাদের জন্য পছন্দ বা মনোনিত করেছি (সুরা মায়িদাহ ৩)
ইসলামই কেবলমাত্র সত্য ধর্ম এবং এ ধর্মই স্রষ্টা কর্তৃক ও তার মনোনিত প্রবর্তক দ্বারা পৃথিবীব্যাপি সমাধিত গৃহীত ও পরিচালিত করেছেন।এখানে আরেকটি কথা বলছি কথাটি মনেরাখবেন,মিরাজ থেকে ফিরে এসে আমার নবী যখন একটার পর একটা বর্ণনা দিচ্ছেন তখন হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের সম্পর্কে বলেন-আমার দৈহিক গঠন ও চেহরা মুবারক ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের ন্যায়।(মিশকাত ৫৮৬৬)।
হজরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তার পুত্র হজরত ঈসমাইল (আ:) নিয়ে পবিত্র কাবা ঘর আল্লাহর জামিনে নির্মান করেছিলেন।যে পাথরে দাড়াইয়ে কাবা ঘর নির্মান করেছিলেন তা এখনো আল্লাহর পবিত্র কাবা ঘরের পাশেই রয়েছে।যাকে মকামে ইব্রাহীম বলা হয়।আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজের প্রাণ প্রিয় সন্তান কে কুরবানি দিতে চেয়েছিলেন বলেই আজ আমরা কুরবানি করছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে ভালবেসে আমার নবী রহমাতুল্লীল আলামীন তাঁর উম্মতরা যেন তাকে স্মরণ করেন সে জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাতে দরুদে ইব্রাহীমে মাধ্যমে দোয়ার বিধান করে দিয়েছেন।উল্লেখ্য যে,হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের ২৫টি সূরায় ২০৪টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
আল্লাহ পাক হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলেন,
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا
আপনি এই কিতাবে ইব্রাহীমের কথা বর্ণনা করুন।নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী
নবী। (সূরা মারইয়াম ৪১) অন্যত্রে বলেন,وَمَنْ أَحْسَنُ دِينًا مِّمَّنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لله وَهُوَ مُحْسِنٌ واتَّبَعَ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَاتَّخَذَ اللّهُ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلاً
যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে সৎকাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করে,যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন, তার চাইতে উত্তম ধর্ম কার? আল্লাহ ইব্রাহীমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন।(সূরা নিসা ১২৫)
#অগ্নিপরীক্ষাঃ
একত্ববাদ তথা মহান রব্বুল আলামীনের তৌহিদের প্রচার করতে গিয়ে ইব্রাহীম খলিলুল্লাহকে এক পরীক্ষায় পড়তে হয়েছিলো। অহংকারী নমরুদ ভেবেছিলো তাকে উপাস্য হিসেবে স্বীকার করবে কিন্তু না তিনি নির্ভয়ে বলেদিলেন,رَبِّيَ الَّذِيْ يُحْيِـيْ وَيُمِيْتُ আমার রব তিনি,যিনি মানুষকে হায়াত এবং মৃত্যুদান করেন।এভাবে বিভিন্ন পূজা বিরোধী যুক্তিতে নমরুদ যখন পরাস্ত হচ্ছে তখন ফন্দি করে হযরত ইব্রাহীমকে আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার হুকুম দেন।তারা অগ্নিকুন্ড তৈরী করে যখন হযরত ইব্রাহীমকে নিক্ষেপ করছেন তখন আল্লাহর প্রিয় এই বন্ধু বলে উঠেন, حَسْبُنَا اللّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ আমার জন্য আল্লাহ তা'য়ালাই যথেষ্ট।তিনি কত সুন্দরইনা তত্বাবধায়ক(সূরা আলে ইমরান ১৭৩)।(একই প্রার্থনা ওহোদ যুদ্ধে আমার নবী রহমাতুল্লীল আলামীন করেছিলেন) অগ্নিপরীক্ষার এই কঠিন মুহূর্তে পুরস্কার স্বরূপ সাথে আল্লাহর নির্দেশ এল-
يَا نَارُ كُونِيْ بَرْداً وَّسَلاَماً عَلَى إِبْرَاهِيمَ
হে আগুন! ঠান্ডা হয়ে যাও এবং ইব্রাহীমের উপরে শান্তিদায়ক হয়ে যাও (সূরা আম্বিয়া ৬৯)।
অবশেষে মূর্তিপূজারী ও তারকাপূজারীদের সাথে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মুক্তি পেয়ে ফিরে আসেন এবং এভাবে আল্লাহ তা'য়ালা কাফিরদের সমস্ত কৌশল বরবাদ করে দেন।ফলে একত্ববাদের নবী হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের দাওয়াত ও তার প্রভাব সকলের নিকটে পৌঁছে গিয়েছিল।
═══════════
#হজরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর গুরুত্বপূর্ণ দোয়া গুলি উপস্থাপন করলাম:-সূরা ইব্রাহিম এর আয়াত (৩৫থেকে ৪১)
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ اجْعَلْ هَـذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعْبُدَ الأَصْنَامَ
যখন ইব্রাহীম বললেনঃ হে পালনকর্তা, এ শহরকে শান্তিময় করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তান সন্ততিকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন।
رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِّنَ النَّاسِ فَمَن تَبِعَنِي فَإِنَّهُ مِنِّي وَمَنْ عَصَانِي فَإِنَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে পালনকর্তা, এরা অনেক মানুষকে বিপথগামী করেছে। অতএব যে আমার অনুসরণ করে, সে আমার এবং কেউ আমার অবাধ্যতা করলে নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
رَّبَّنَا إِنِّي أَسْكَنتُ مِن ذُرِّيَّتِي بِوَادٍ غَيْرِ ذِي زَرْعٍ عِندَ بَيْتِكَ الْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُواْ الصَّلاَةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِّنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَارْزُقْهُم مِّنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
হে আমাদের পালনকর্তা, আমি নিজের এক সন্তানকে তোমার পবিত্র গৃহের সন্নিকটে চাষাবাদহীন উপত্যকায় আবাদ করেছি; হে আমাদের পালনকর্তা, যাতে তারা নামায কায়েম রাখে। অতঃপর আপনি কিছু লোকের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করুন এবং তাদেরকে ফলাদি দ্বারা রুযী দান করুন, সম্ভবতঃ তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে
رَبَّنَا إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِي وَمَا نُعْلِنُ وَمَا يَخْفَى عَلَى اللّهِ مِن شَيْءٍ فَي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاء
হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি তো জানেন আমরা যা কিছু গোপনে করি এবং যা কিছু প্রকাশ্য করি। আল্লাহর কাছে পৃথিবীতে ও আকাশে কোন কিছুই গোপন নয়।
الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِي وَهَبَ لِي عَلَى الْكِبَرِ إِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ إِنَّ رَبِّي لَسَمِيعُ الدُّعَاء
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আমাকে এই বার্ধক্যে ইসমাঈল ও ইসহাক দান করেছেন নিশ্চয় আমার পালনকর্তা দোয়া শ্রবণ করেন।
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلاَةِ وَمِن ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاء
হে আমার পালনকর্তা, আমাকে নামায কায়েমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা, এবং কবুল করুন আমাদের দোয়া।
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।
#সম্মানিত বন্ধুরা "আসুন সবাই মিলে ইসলামের রাহে উম্মতে মুহাম্মদীর মুক্তির কথা বলি "
See less
— with Minhaz Faruk and
4 others
.All reactions:
Comments
MD Mustofa Kamal
Allah huk bar
Rubina Sheikh
Amin
Md Sha Al Amin
na sha allah
Owafia Jishan
Ameen Ameen
Log in or sign up for Facebook to connect with friends, family and people you know.
or
Comments
Post a Comment